শেষ সময়ে বোরো ধানের যত্নে যা করতে হবে
কোথাও কোথাও ইতোমধ্যে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। কোথাও বা ধানে থোড় এসেছে। কয়েকদিন পরেই পাক ধরবে। প্রায় ৮০ ভাগের বেশি বোরো ধান এখনও মাঠেই রয়েছে। শেষ সময়ে বোরো ধানের যত্নে আরও কৌশলী হতে হবে।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের পক্ষ থেকে শেষ সময়ে বোরো ধানের পরিচর্যা ও সতর্কতা বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, যারা এবার দেরিতে বোরো ধানের চারা রোপণ করেছেন, তাদের জমিতে চারার বয়স ৫০ থেকে ৫৫ দিন হলে ইউরিয়া সারের শেষ কিস্তি উপরি প্রয়োগ করতে হবে। তবে কেউ যদি দানাদার ইউরিয়ার পরিবর্তে গুটি ইউরিয়া ব্যবহার করে থাকেন, তবে ইউরিয়ার উপরি প্রয়োগের প্রয়োজন নেই।
কৃষি তথ্য সার্ভিস জানায়, জমিতে আগাছা পরিষ্কার করা, সেচ দেওয়া, বালাই দমন- এসব কাজ সঠিকভাবে করতে হবে। থোড় আসা শুরু হলে জমিতে পানির পরিমাণ দ্বিগুণ বাড়াতে হবে। ধানের দানা শক্ত হলে জমি থেকে পানি বের করে দিতে হবে।
পোকা মাকড়ের আক্রমণের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, এ মাসে বোরো ধানে মাজরা পোকা, বাদামি গাছ ফড়িং, সবুজ পাতা ফড়িং, গান্ধি পোকা, লেদা পোকা, ছাতরা পোকা, শীষকাটা লেদা পোকা, ছাতরা পোকা, পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণ হতে পারে। পোকা দমনের জন্য নিয়মিত খেত পরিদর্শন করতে হবে এবং সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পোকার আক্রমণ রোধ করতে হবে।
এক্ষেত্রে আলোর ফাঁদ পেতে, পোকা ধরার জাল ব্যবহার করে, ক্ষতিকর পোকার ডিমের গাদা নষ্ট করে, উপকারী পোকা সংরক্ষণ করে, খেতে ডাল-পালা পুঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করার মাধ্যমে ধানখেত বালাই মুক্ত করা দরকার।
এসব উপায়ে পোকার আক্রমণ প্রতিহত করা না গেলে শেষ উপায় হিসেবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে সঠিক বালাইনাশক, সঠিক সময়ে, সঠিক মাত্রায়, সঠিক নিয়মে প্রয়োগ করতে হবে। এ সময় ধান খেতে উফরা, বাদামি দাগ রোগ, ব্লাস্ট, পাতাপোড়া ও টুংরো রোগসহ অন্যান্য রোগ হতে পারে।
জমিতে উফরা রোগ দেখা দিলে যেকোনো কৃমিনাশক যেমন ফুরাডান ৫জি বা কিউরেটার বা ব্রিফার ৫জি প্রয়োগ করতে হবে। ব্লাস্ট রোগ দেখা দিলে ইউরিয়া সারের উপরি প্রয়োগ সাময়িকভাবে বন্ধ রেখে হেক্টরপ্রতি ৪০০ গ্রাম ট্রুপার বা জিল বা নাটিভো বা ব্লাস্টিন ১০ থেকে ১৫ দিনের ব্যবধানে দুইবার প্রয়োগ করতে হবে।
জমিতে পাতাপোড়া রোগ হলে অতিরিক্ত ৫ কেজি-বিঘা হারে পটাশ সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে এবং জমির পানি শুকিয়ে ৭ থেকে ১০ দিন পর আবার সেচ দিতে হবে। আর টুংরো রোগ দমনের জন্য এর বাহক পোকা সবুজ পাতা ফড়িং দমন করতে হবে।
একে/এসএসএইচ