এ সময়ে মাছ-মুরগি খামারিদের যা যা করতে হবে
গ্রীষ্ম প্রায় শেষ, দুয়ারে কড়া নাড়ছে বর্ষা। ঋতু পরিবর্তনের এ সময়ে খামারের গরু, হাঁস মুরগি ও মাছের বিশেষ যত্ন নিতে হবে। তবেই উৎপাদনে আসবে সফলতা।
কৃষি তথ্য সার্ভিস এর পরিচালক কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী জানান, খামারিদের জন্য এ সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়ম মেনে যত্ন করতে হবে। সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিলেই মিলবে সফলতা।
তিনি বলেন, গরমকালে মুরগি পালনে একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। এদের মধ্যে অন্যতম হলো খাদ্যগ্রহণ জটিলতা, ব্রয়লারের দৈহিক ওজন বৃদ্ধির হার ঠিক না থাকা, লেয়ার ও ব্রিডারের ডিম উৎপাদনসহ ডিমের খোসার গুণগত মান কমে কমে যাওয়া এবং খামারে মুরগি মারা যাওয়ার হার বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি।
কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ব্রুডার হাউসের শেডে বাচ্চা তোলার সঙ্গে সঙ্গে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি ও গ্লুকোজ খাওয়াতে হবে। আর লেয়ার হাউস ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে শেডের চাল বা ছাদে তাপ বিকিরণ করতে পারে এমন সাদা, অ্যালুমিনিয়িাম রঙ দেওয়া প্রয়োজন। অতিরিক্ত গরমে পাইপ বা ঝরনার মাধ্যমে পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। ক্ষুদ্র খামারের ক্ষেত্রে চালের উপরে পাটের চট দিয়ে পানি ছিটাতে হবে। তীব্র গরমে খাবারের পানির সঙ্গে বরফ মেশানো দরকার।
কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্র জানায়, হাঁস-মুরগির রোগ প্রতিরোধে নিয়মিত ভ্যাকসিন বা টিকা দেয়া জরুরি। সেজন্য মুরগির রাণীক্ষেত, ব্রংকাইটিস, ফাউলপক্ষ, ফাউল কলেরা, ম্যারেক্স এবং হাঁসের প্লেগ ও কলেরা রোগের টিকা দেয়ার জন্য উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
গোখাদ্যের জন্য নেপিয়ার, বাজরা, প্যারা, ভুট্টা, ইপিল ইপিল চাষ করার ভালো সময় এখন। বাড়ির আশপাশে, পুকুর পাড়ে, রাস্তার ধারে, পতিত জায়গায় গোখাদ্যের চাষ করে লাভবান হওয়া যায়। গ্রীষ্মের দাবদাহে গবাদি পশুর জন্য অতিরিক্ত খাবার, বিশ্রাম, ঘরে আলো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা, বেশি পানি খাওয়ানোসহ অন্যান্য কার্যক্রম সঠিকভাবে করতে হবে। এ সময় গবাদি পশুর তড়কা ও গলাফুলা রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকারের জন্য টিকা প্রদানসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে।
কৃষি তথ্য সার্ভিস জানায়, বর্তমান সময়টা পুকুরে মাছ ছাড়ার উপযুক্ত সময়। ভালোভাবে পুকুর তৈরি করে অর্থাৎ সেচ, কাদা সরিয়ে, চুন প্রয়োগ করে, আগাছা পরিষ্কার, পানি দেয়া, পানি পরীক্ষা, পুকুর পাড়ে নিত্য পাতা ঝরা গাছ ছাঁটাই বা কেটে ফেলাসহ অন্যান্য কাজগুলো করতে হবে।
এরপর প্রতি শতকে মিশ্রচাষের জন্য ৩০ থেকে ৪০টি ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি বড় সুস্থ সবল পোনা ছাড়তে হবে। পানির তিন স্তরের কথা বিবেচনা করে তেলাপিয়া, সরপুঁটি, নাইলোটিকা, কার্পজাতীয় মাছ, রুই, কাতল, মৃগেল কালো বাউস এবং সম্ভব হলে চিংড়ি পোনাও ছাড়া যাবে। পোনা সংগ্রহের সময় বিশ্বস্ত উৎস থেকে পোনা সংগ্রহ করতে হবে।
একে/আরএইচ