দুই গ্রামকে মৎস্য গ্রাম ঘোষণা
মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে নেত্রকোনার দক্ষিণ বিশিউড়া ও শরীয়তপুরের হালইসার গ্রামকে ‘মৎস্য গ্রাম’ ঘোষণা করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (২২ জুন) সকাল পৌনে ১১টার দিকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইফতেখার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মৎস্য) শ্যামল চন্দ্র কর্মকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, মূলত এই দুই গ্রামকে মৎস্য চাষে একটি উদাহরণ হিসেবে তৈরি করা হবে। আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক মৎস্য চাষে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা হবে। পরিত্যক্ত খাল বিল, জলাশয় মাছের আওতায় নিয়ে আসার কাজ সম্পাদন হবে।
তিনি বলেন, মৎস্য গ্রাম ঘোষণা করার আরেকটি অন্যতম কারণ হলো- ওই গ্রামের সবাইকে মাছ চাষে আগ্রহী করে তোলা। একটি গ্রামকে যখন মৎস্য গ্রাম ঘোষণা করা হয়, স্বাভাবিকভাবে সেখানের মানুষদের মাছ চাষের আওতায় নিয়ে আসা যাবে। আমাদের কর্মকর্তারা সেখানে যাবেন, সবাইকে পরামর্শ দেবেন। মানুষ যেন মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেন সেসব বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে। তাদের উপকরণ সহায়তা দেওয়া হবে।
যেসব কার্যক্রম সম্পাদন হবে গ্রাম দুটিতে
মৎস্য অধিদফতর জানায়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় এ বিষয়ে গত সোমবার (২১ জুন) পত্র জারি করেছে মৎস্য অধিদফতর। এতে বলা হয়েছে, বর্তমান সরকারের বিশেষ কর্মসূচি ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ বাস্তবায়নে মৎস্য অধিদফতরের ‘মৎস্য গ্রাম’ কার্যক্রম মূলত সমৃদ্ধ গ্রাম গড়ে তোলার অন্যতম একটি ভালো উদ্যোগ।
এর আওতায় গ্রামাঞ্চলে অবকাঠামো উন্নয়ন, মৎস্য চাষ, কৃষিনির্ভর শিল্প, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, কৃষির বহুমুখীকরণ ও বাজার ব্যবস্থাপনাসহ নানারকম সুবিধা সম্প্রসারণের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ও জীবনমান উন্নয়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
মৎস্য অধিদফতর গ্রাম দুটিতে যেসব কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, গ্রামের সকল পুকুর ও দিঘীতে বিজ্ঞানসম্মত মাছ চাষ কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও পুষ্টির চাহিদা পূরণে ব্যবস্থা গ্রহণ।
মাছ চাষিদের দল গঠন, প্রশিক্ষণ ও প্যাকেজভিত্তিক পুকুরে মাছ চাষ প্রদর্শনী, জেলেদের দল গঠন, প্রশিক্ষণ, বিকল্প কর্মসংস্থান ও ঋণ সহায়তা দেওয়া, উন্মুক্ত জলাশয় তথা বিল ও প্লাবন ভূমিতে সমাজভিত্তিক মৎস্য ব্যবস্থাপনা দল গঠন, বিল নার্সারি স্থাপন ও পোনা অবমুক্তকরণ, জলাশয় সংস্কার ও মাছের অভয়াশ্রম স্থাপন এবং কমিউনিটি সঞ্চয় দল গঠনের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন।
এছাড়া গ্রাম দুটিতে সরকারের অন্যান্য দফতরের সহায়তায় যে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে তা হলো- গভীর নলকূপ ও স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা স্থাপন, যানবাহন চলাচল উপযোগী রাস্তা নির্মাণ, বৃক্ষরোপণ, সুফলভোগীদের হাঁস-মুরগি ও গবাদি পশুর চিকিৎসার ব্যবস্থার নেওয়া হয়েছে। গ্রামের বাসিন্দাদের সন্তানদের শতভাগ শিক্ষা কর্মসূচি নিশ্চিত ও অন্যান্য শিক্ষা কার্যক্রমও থাকবে।
একে/এমএইচএস