কৃষিপণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধিতে জার্মানিকে বিনিয়োগের আহ্বান
কৃষিপণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধিতে বাংলাদেশে জার্মানিকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। পাশাপাশি কৃষি বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার জন্যও ইউরোপের দেশটির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে ‘বাংলাদেশের কৃষিপণ্যের রপ্তানি ও বাণিজ্যের সুযোগ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সম্মেলনে এ আহ্বান জানান মন্ত্রী। জার্মানির বাংলাদেশ দূতাবাস এবং জার্মান অ্যাগ্রিবিজনেস অ্যালায়েন্সের উদ্যোগে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
‘বাংলাদেশ ও জার্মানির মধ্যে চলমান বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও কার্যকরভাবে বৃদ্ধি করার অনেক সুযোগ ও সম্ভাবনা আছে’ উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘বিশেষ করে কৃষিক্ষেত্রে মানসম্পন্ন কৃষিপণ্যের উৎপাদন, অ্যাগ্রো-প্রসেসিং, কৃষিযান্ত্রিকীকরণ, ভ্যালু চেইন ও রপ্তানির জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরিতে জার্মানির বিনিয়োগ ও সহযোগিতার সুযোগ অনেক রয়েছে।’
অনলাইনে আয়োজিত এ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে বর্তমানে মানসম্পন্ন আম, আনারস, লিচু, পেয়ারা, কলাসহ অন্যান্য ফলমূল এবং বিভিন্ন ধরনের তাজা শাকসবজি উৎপাদিত হচ্ছে।
এসব পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধিতে জার্মানির কারিগরি সহায়তা, জনবল প্রশিক্ষণ, ল্যাব স্থাপন ও টেস্টিং সুবিধা বাড়ানো, আধুনিক প্যাক হাউজ এবং ফুড প্রসেসিংয়ে বিনিয়োগ এবং সহযোগিতা করতে পারে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে কৃষিপণ্যের রপ্তানি বাড়াতে বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে গ্যাপ (জিএপি) নীতিমালা অনুমোদন করেছে বলে জানান ড. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, ‘সর্বাধুনিক প্যাক হাউজ এবং অ্যাক্রেডিটেশন ল্যাবরেটরি স্থাপনের উদ্যোগও নেয়া হয়েছে। ফলে জার্মানিসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে বাংলাদেশের কৃষিপণ্যের রপ্তানি বহুগুণে বৃদ্ধির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।
এ সুযোগকে কাজে লাগাতে সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ এবং পদক্ষেপ গ্রহণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
ভার্চুয়াল এ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে যুক্ত হয়েছিলেন- জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াসহ কৃষিমন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান দূতাবাসের মিশন উপপ্রধান কনস্ট্যাঞ্জা জেহরিঙ্গার, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মো. বখতিয়ার, জার্মান অ্যাগ্রিবিজনেস অ্যালায়েন্সের জেন্স ওডিং, বার্লিনে বাংলাদেশ দূতাবাসের বাণিজ্যিক কাউন্সেলর মো. সাইফুল ইসলাম, গ্লোবাল গ্যাপের (জিএপি) সিইও/প্রেসিডেন্ট ক্রিশ্চিয়ান ম্যুলার, ইউএসএআইডি বাংলাদেশের অনিরুদ্ধ রায়।
এছাড়াও জার্মান অ্যাগ্রিবিজনেস অ্যালায়েন্স, গ্লোবাল গ্যাপ, ইউএসএআইডি, বাপা, বাংলাদেশের তাজা ফল ও শাকসবজি রপ্তানিকারক সমিতির প্রতিনিধিরা অংশ নেন এ সম্মেলনে।
এতে গ্লোবাল গ্যাপ ও ইউএসএআইডি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তিনটি পেপার উপস্থাপনা করা হয়। গ্যাপ নীতিমালা মেনে কীভাবে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করা যায় এর বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি জার্মানিসহ অন্যান্য ইইউ দেশগুলোতে রপ্তানির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী কৃষিপণ্যের গুণগতমান বজায় রাখা ও স্বীকৃত সার্টিফিকেট নেওয়ার ওপরও গুরুত্ব দেন সংশ্লিষ্টরা।
একে/এফআর