উন্নত আবহাওয়া ও বন্যার তথ্য ব্যবস্থা নিয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত
কমিউনিটি ভিত্তিক ঝুঁকি এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনার জন্য উন্নত আবহাওয়া ও বন্যা সংক্রান্ত তথ্য ব্যবস্থার ওপর শিক্ষণ বিনিময় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, প্রকল্পটির মধ্য দিয়ে বন্যাপ্রবণ কমিউনিটির জীবিকার ক্ষয়-ক্ষতি হ্রাসের পাশাপাশি জীবন-যাপন এবং খাদ্য নিরাপত্তা উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনের জন্য সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর তিনি জোর দেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আতিকুল হক বলেন, ২০২০ সালের ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের সময় দুর্যোগের আগাম তথ্য ঘূর্ণিঝড় প্রবণ এলাকাগুলোতে সরকার ভয়েস মেসেজের মাধ্যমেই দ্রুত পৌঁছে দিয়েছিল এবং দ্রুত আগাম তথ্য ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে রাইমেসের ভয়েস মেসেজ ব্রডকাস্টিং সিস্টেম আবারো কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।
এ পাইলট প্রকল্প থেকে পাওয়া সফল পদক্ষেপগুলো বিশেষ করে দুর্যোগ মোকাবেলায় কীভাবে সরকারি নীতিমালায় রাইমসের ভয়েস মেসেজ ব্রডকাস্টিং সিস্টেম যোগ করা যায় তা নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর কাজ করবে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক ইঞ্জিনিয়ার ফজলুর রশীদ বলেন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যা পূর্বাভাসের লিড টাইম বৃদ্ধি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে এবং রাইমসের এ প্রকল্পের মাধ্যমে ১৫ দিনের দীর্ঘমেয়াদি বন্যা পূর্বাভাস সংযোজন একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ভবিষ্যতে রাইমস এবং বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ সমন্বিত কার্যক্রম অব্যহত থাকবে।
খাদ্য নিরাপত্তা সম্পর্কিত সুদূর প্রসারী কার্যক্রমকে সামনে রেখে ইউএসএইডের আর্থিক সহায়তায় এবং বাংলাদেশ সরকারের সম্পূরক সহায়তায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
এ প্রকল্পের আওতায় কমিউনিটি ঝুঁকি হ্রাস এবং কৃষি, প্রাণিসম্পদ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায়, আবহাওয়া ও বন্যার পূর্বাভাস সংক্রান্ত তথ্য ব্যবস্থার ও তার ভিত্তিতে পরামর্শ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এ প্রকল্পের মাধ্যমে আমাদের চিরাচরিত ধারণা “আবহাওয়া কী হবে” থেকে সরে এসে “আবহাওয়া কি করবে” ধারণায় অগ্রসর হওয়ার জন্য কাজ করা হয়।
এ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে বন্যা পূর্বাভাসের লিড টাইম উন্নীত করা হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা অববাহিকার জন্য ১৫ দিনের সম্ভাবনাভিত্তিক দীর্ঘ মেয়াদী বন্যার পূর্বাভাস চালু করা হয় এবং ২০২০ সাল থেকে তা বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাস ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এছাড়াও এ প্রকল্পের আওতায় রাইমস এবং বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের যৌথ প্রচেষ্টায় উপজেলা ভিত্তিক পূর্বাভাস চালু করা হয়েছে যা পূর্বে জেলা পর্যায়ে সীমাবদ্ধ ছিল। বর্তমানে এ উপজেলা ভিত্তিক পূর্বাভাস বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। বিভিন্ন সক্ষমতা বৃদ্ধি কর্মশালা এবং প্রশিক্ষণের মাধমে বাংলাদেশ বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র ও বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের কাছে নতুন উদ্ভাবিত এসব সিস্টেম হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ প্রকল্পের আওতায় আবহাওয়া ও বন্যার পূর্বাভাস এবং তার ভিত্তিতে পরামর্শ সেবা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য ভয়েস মেসেজ সার্ভিস প্রদান করা হয়েছে এবং এর মাধ্যমে পূর্বাভাস বার্তা সরাসরি মাঠ পর্যায়ে সাধারণ মানুষ, স্থানীয় পর্যায়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি, স্থানীয় পর্যায়ের সেবাপ্রদানকারি সংস্থা, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে কাছে প্রেরণ করা সম্ভব হয়েছে।
ওয়েবভিত্তিক এ ভয়েস মেসেজ সিস্টেমের ওপর ভিত্তি করে কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর স্বল্প ব্যয়ে পূর্বাভাস ও আগাম সতর্কীকরণ বার্তা প্রেরণ করতে সক্ষম হবে।
ইতোমধ্যে গত ২১ সেপ্টেম্বর ভয়েস মেসেজ সিস্টেম কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এমএএস