লাগাতার ঘন কুয়াশায় রবি শস্যে ক্ষতির শঙ্কা
দেশে মাঠ জুড়ে এখন রবি শস্য। সরিষা, আলু থেকে শুরু করে ডজনখানেক রবি ফসল চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। অনেক ফসল ঘরে তোলার সময়ও হয়েছে। কিন্তু গত দুসপ্তাহ ধরে নিয়মিত মাঝারি ও ঘন কুয়াশায় অনেক ফসলেই বেড়েছে রোগ বালাইসহ নানা সমস্যা।
ফসল চাষে সফলতা পেতে এ সময় সঠিক যত্ন নিতে বলছেন কৃষি কর্মকর্তারা। এছাড়া আমের ভালো ফলন পেতে আগাম প্রস্তুতির পরামর্শ দিয়েছেন।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ সময়ে শাক-সবজি ও আমের জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঘন কুয়াশার কারণে বিভিন্ন রোগ বালাইয়ের আক্রমণসহ নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়।
তিনি বলেন, এভাবে বেশি দিন ঘন কুয়াশা থাকলে রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে যেসব ফসল সংগ্রহের সময় হয়ে গেছে সেসব ফসলের ক্ষতি বেশি হবে।
এ কৃষিবিদ জানান, রবি ফসলের ভালো ফলন পেতে মাঠে থাকা শাক-সবজি যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, বেগুন, ওলকপি, শালগম, গাজর, শিম, লাউ, কুমড়া, মটরশুঁটি এসবের নিয়মিত যত্ন নিতে হবে।
ঘন কুয়াশার কারণে টমেটো ফসলের মারাত্মক ফলছিদ্রকারী পোকার আক্রমণ বেড়ে যায়। ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে পুরুষ মথ ধরে সহজে এ পোকা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এ ক্ষেত্রে প্রতি বিঘা জমির জন্য ১৫টি ফাঁদ স্থাপন করতে হবে। ক্ষেতে পতঙ্গভুক পাখি বসার ব্যবস্থা করতে হবে।
কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্র জানায়, কুয়াশার কারণে ধানের চারা হলদে হয়ে যেতে পারে। সরিষায় বিভিন্ন পোকামাকড়ের আক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। আলুর পাতায় মড়ক লাগার সম্ভাবনা আছে। এসব বিষয়ে সমাধান পেতে নিকটস্থ কৃষি অফিসে যোগাযোগ করে সমাধান নিতে হবে।
আমের বিশেষ যত্ন
সাধারণত এ সময় আম গাছে মুকুল আসে। গাছে মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার আগ পর্যন্ত আক্রান্ত গাছে টিল্ট-২৫০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি অথবা ২ গ্রাম ডাইথেন এম-৪৫ প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। আমের আকার মটরদানার মতো হলে গাছে দ্বিতীয়বার স্প্রে করতে হবে।
এ সময় প্রতিটি মুকুলে অসংখ্য হপার নিম্ফ দেখা যায়। আম গাছে মুকুল আসার ১০ দিনের মধ্যে কিন্তু ফুল ফোটার আগেই একবার ও এর একমাস পর আরো একবার প্রতি লিটার পানির সাথে ১.০ মিলি সিমবুস/ফেনম/ডেসিস ২.৫ ইসি মিশিয়ে গাছের পাতা, মুকুল ও ডালপাল ভালোভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে।
এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘন কুয়াশা আরও একদিন থাকার সম্ভাবনা আছে। তবে আগামী সপ্তাহ থেকে এর তীব্রতা কমতে থাকবে।
একে/ওএফ