হাইড্রোলিক ব্রেকের তেল কমছে? না জানলে ঘটতে পারে বড় বিপদ
প্রতিদিনই আমরা নির্ভর করি মোটরসাইকেল বা স্কুটারের উপর। বিশেষ করে যারা হাইড্রোলিক (ডিস্ক) ব্রেকযুক্ত বাইক চালান, তারা ভাবেন— এক চাপেই ব্রেক লেগে যাবে, সব ঠিকঠাকই আছে।
কিন্তু কল্পনা করুন, একদিন হঠাৎ ব্রেক চাপার পরও বাইক থামছে না! ফলাফল— ভয়ংকর দুর্ঘটনা। এমন পরিস্থিতির পেছনে একটি ছোট কারণও থাকতে পারে— হাইড্রোলিক ব্রেকের তেল বা ‘ব্রেক তরল’ স্বাভাবিক মাত্রার নিচে নেমে যাওয়া, যা অনেক চালকই খেয়াল করেন না।
বিজ্ঞাপন
কীভাবে কাজ করে হাইড্রোলিক ব্রেক?
যখন আপনি সামনে ব্রেক চাপেন (সাধারণত ডান হাতে থাকা লিভার), সেই চাপ মাস্টার সিলিন্ডারের মাধ্যমে হাইড্রোলিক চাপ বা তরলচাপ হিসেবে রূপান্তরিত হয়। এরপর সেই চাপ ছড়িয়ে পড়ে ক্যালিপার পর্যন্ত। ক্যালিপার তখন চাকাকে ঘিরে ধরা ডিস্ক প্যাডকে চাপে রাখে, ফলে বাইক থেমে যায়।
এই পুরো ব্যবস্থার মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে ব্রেক তরল। যা মাস্টার সিলিন্ডারে থাকা ছোট একটি রিজার্ভারে সংরক্ষিত থাকে। সাধারণভাবে একে ব্রেক অয়েল বলা হয়।
বিজ্ঞাপন
হাইড্রোলিক ব্রেকের তেল কমে গেলে কী কী ঝুঁকি তৈরি হয়?
হাইড্রোলিক সিস্টেমে ব্রেক তেল বা তরল যখন নির্ধারিত মাত্রার নিচে নেমে যায়, তখন দেখা দেয় বেশ কিছু মারাত্মক সমস্যা-
১. ব্রেক পুরোপুরি ফেল করতে পারে
ব্রেক চাপলেও গতি কমে না, বাইক থামে না— যেটি সরাসরি দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।
২. ব্রেকের সাড়া দেওয়া ধীর হয়ে যায়
ব্রেক লিভারে জোর প্রয়োগ করেও বাইক দ্রুত থামছে না। চলন্ত অবস্থায় সামনে মানুষ বা যান আসলে বিপদ অনিবার্য।
৩. ব্রেক কাজ করছে একবার, পরেরবার করছে না
অসামঞ্জস্যপূর্ণ ব্রেকিং ড্রাইভারকে বিভ্রান্ত করে। কখনো কাজ করছে, কখনো নয়— এটা সবচেয়ে বিপজ্জনক একটি অবস্থা।
৪. তরল লিক হলে আরও বড় ঝুঁকি
ব্রেক তরল যদি কোথাও লিক হয় এবং তা ডিস্কে গিয়ে পড়ে, তাহলে ডিস্ক প্যাড পিচ্ছিল হয়ে যেতে পারেG যা হঠাৎ ব্রেক কাজ না করার অন্যতম কারণ।
কেন কমে যায় ব্রেক তেল?
ব্রেক তেল কমে যাওয়ার পেছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে-
- মাস্টার সিলিন্ডার বা ব্রেক লাইনে ফুটো বা লিক
- তরলের মেয়াদ শেষ হয়ে বাষ্পে পরিণত হওয়া
- ডিস্ক প্যাড ক্ষয় হয়ে যাওয়ায় বেশি তরল লাগা
- নিয়মিত সার্ভিসিং না করায় ফ্লুইড পর্যবেক্ষণ না থাকা
কীভাবে প্রতিরোধ করবেন এই বিপদ?
আপনার ও বাইকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিচের বিষয়গুলো মেনে চলুন-
- প্রতি মাসে অন্তত একবার ব্রেক তেলের মাত্রা পরীক্ষা করুন।
- ব্রেক লিভার নরম বা অস্বাভাবিক মনে হলে তাৎক্ষণিকভাবে মেকানিকের পরামর্শ নিন।
- প্রতি ১ থেকে ২ বছর অন্তর ব্রেক ফ্লুইড সম্পূর্ণ পরিবর্তন করুন।
- তরল রিফিল করার সময় সর্বদা নির্দিষ্ট গ্রেডের (যেমন DOT 3 বা DOT 4) তরল ব্যবহার করুন।
- রেগুলার সার্ভিসিং করুন এবং মোটরসাইকেলের ব্রেকিং সিস্টেম ভালোভাবে চেক করুন।