পুরোনো গাড়ি কিনবেন? তাহলে এই ১০ কৌশল জানতেই হবে
বাংলাদেশে তরুণদের মধ্যে পুরোনো গাড়ি কেনার আগ্রহ ক্রমেই বাড়ছে। গাড়ি শোরুম থেকে নতুন গাড়ি কেনা অনেকের পক্ষে সম্ভব নয়, তাই অনেকেই সেকেন্ড-হ্যান্ড বা ব্যবহৃত গাড়ির দিকে ঝুঁকছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে গত বছর প্রায় ৩ কোটি ৭০ লাখ পুরনো গাড়ি কেনাবেচা হয়েছে। কিন্তু দাম বাড়ার এই সময়ে সচেতন না হলে প্রতারণার শিকার হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই পুরোনো গাড়ি কেনার আগে কিছু ধাপ অনুসরণ করলে আপনি সাশ্রয়ী এবং ভালো মানের গাড়ি পেতে পারেন।
বিজ্ঞাপন
১. বাজেট ঠিক করুন
গাড়ির জন্য মাসিক খরচ আপনার মাসিক আয়ের ২০% এর বেশি না হওয়াই ভালো। এর মধ্যে গাড়ির কিস্তি, জ্বালানি, বীমা ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ওয়ারেন্টি ছাড়া গাড়ি কিনলে অপ্রত্যাশিত মেরামতের জন্য অতিরিক্ত একটি ফান্ড রাখা বুদ্ধিমানের কাজ।
২. লক্ষ্য ঠিক করুন – কোন গাড়ি কিনবেন
হোন্ডা সিআর-ভি বা টয়োটা এর মতো জনপ্রিয় মডেলের দাম সাধারণত বেশি হয়। তুলনামূলক সাশ্রয়ী বিকল্প হতে পারে ফোর্ড এস্কেপ বা কিয়া স্পোর্টেজ। বাজেটের মধ্যে কয়েকটি গাড়ির তালিকা তৈরি করুন এবং অনলাইনে রিভিউ দেখে তুলনা করুন।
বিজ্ঞাপন
৫ বছরের কম বয়সী গাড়ি কিনতে চাইলে সার্টিফায়েড প্রি-অউনড (CPO) গাড়ি বিবেচনা করতে পারেন। যা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘমেয়াদি ওয়ারেন্টির আওতায় থাকে।
৩. ব্যক্তিগত বিক্রেতা বনাম ডিলার – কোনটা ভালো
ব্যক্তিগত বিক্রেতার কাছ থেকে কেনা:
-
দাম তুলনামূলক কম
-
ক্যাশ লেনদেন বেশি হয়
-
গাড়ি পরীক্ষা করাতে বিক্রেতা রাজি নাও হতে পারে
ডিলার থেকে কেনা:
-
এক জায়গায় বহু গাড়ি দেখা ও টেস্ট ড্রাইভের সুযোগ
-
সহজ ফাইন্যান্সিং ব্যবস্থা
-
দাম সাধারণত বেশি
-
দামাদামি করার সুযোগ বেশি
৪. বাজারদর যাচাই করুন
গাড়ির মডেল, অবস্থা, মাইলেজ ও বাজারের চাহিদা অনুযায়ী দাম ভিন্ন হয়। ব্যক্তিগত বিক্রেতার গাড়ি সাধারণত ডিলারের তুলনায় কয়েকশ থেকে কয়েক হাজার টাকা পর্যন্ত কম দামে পাওয়া যেতে পারে।
৫. গাড়ির রিপোর্ট সংগ্রহ করুন
গাড়ির অতীত জানতে ভেহিকল হিস্ট্রি রিপোর্ট অপরিহার্য। দুর্ঘটনা, ওডোমিটার পরিবর্তন বা স্যালভেজ টাইটেল আছে কিনা তা জানা যাবে। Carfax বা AutoCheck এর মতো প্ল্যাটফর্ম থেকে রিপোর্ট পাওয়া যায়।
৬. বিক্রেতার সাথে যোগাযোগ করুন
ফোন, ইমেইল বা মেসেজে গাড়ির অবস্থা, সার্ভিস রেকর্ড ও বিক্রির কারণ জেনে নিন। দেখা করার আগে গাড়ি স্টার্ট না দিতে বলুন যাতে ঠান্ডা অবস্থায় ইঞ্জিন পরীক্ষা করতে পারেন।
৭. টেস্ট ড্রাইভ দিন
টেস্ট ড্রাইভের সময় খেয়াল করুন:
-
বসার আরাম ও স্পেস
-
দৃশ্যমানতা ও ব্লাইন্ড স্পট
-
ব্রেক, টায়ার ও সাসপেনশন
-
এয়ারকন্ডিশন ও লাইট
-
ইঞ্জিনে তেল লিক বা অস্বাভাবিক শব্দ আছে কিনা
৮. মেকানিক দিয়ে পরীক্ষা করান
২-৩ হাজার টাকা খরচ করে গাড়ি একজন বিশ্বস্ত মেকানিককে দেখাতে পারেন। বড় সমস্যা থাকলে কেনা থেকে বিরত থাকুন।
৯. দর কষাকষি করুন
গবেষণার ভিত্তিতে একটি ন্যায্য দাম প্রস্তাব করুন। প্রথমে সর্বোচ্চ বাজেট না বলে কিছুটা কম দাম অফার করুন, যাতে আলোচনার সুযোগ থাকে।
১০. কাগজপত্র সম্পূর্ণ করুন
ডিলার থেকে কিনলে সেলস কনট্রাক্ট, ট্যাক্স, রেজিস্ট্রেশন ও বীমা নিশ্চিত করুন। ব্যক্তিগত বিক্রেতার ক্ষেত্রে মালিকানা হস্তান্তর সঠিকভাবে সম্পন্ন করুন।
সতর্ক থাকুন, ধৈর্য ধরুন এবং গবেষণা করুন — তাহলেই পুরনো গাড়ি কেনা হবে লাভজনক ও নিরাপদ।