অনেক সময় আমরা দীর্ঘদিন গাড়ি কিংবা মোটরযান ব্যবহার করি না। দীর্ঘ ভ্রমণ থেকে ফেরার পর, কিংবা অসুস্থ হলে বা তেমন প্রয়োজন না থাকলে গাড়ি গ্যারেজে ফেলে রাখা হয়। কিন্তু কিছু বিষয়ে সতর্ক না থাকলে এই ‘অচল’ গাড়িই হয়ে উঠতে পারে নানা ভোগান্তির কারণ। নিয়মিত মোটরযান না চালালে গাড়ির ভেতর ও বাইরের নানা অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

এবার জেনে নেওয়া যাক, গাড়ি বসিয়ে রাখলে যেসব ক্ষতি হতে পারে...

১. ব্যাটারির ক্ষতি

গাড়ি না চালালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় ব্যাটারি। যার চার্জ ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়। বিশেষ করে আধুনিক গাড়ির ব্যাটারি সবসময় কিছু না কিছু বিদ্যুৎ খরচ করে; ঘড়ি, অ্যালার্ম সিস্টেম কিংবা ইলেক্ট্রনিক সেন্সরের জন্য। ফলে দীর্ঘদিন গাড়ি ব্যবহার না করলে ব্যাটারি ‘ডেড’ হয়ে যেতে পারে।

২. ইঞ্জিন অয়েলসহ বিভিন্ন লিকুইডের মান কমে যাওয়া

গাড়ি না চালালে ইঞ্জিন অয়েল, ব্রেক ফ্লুইড এর মতো তরল স্থির অবস্থায় যেমন আর্দ্রতা শোষণ করে, কিছু ক্ষেত্রে জমাট বেঁধে যায়। এতে অয়েলের লুব্রিকেশন ক্ষমতা কমে যায় এবং ইঞ্জিন চালুর সময় খানিকটা চাপ পড়ে যায়।

৩. টায়ারের ক্ষতি

দীর্ঘদিন একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকলে টায়ারে ফ্ল্যাট স্পট তৈরি হয়; একভাবে চাপ খেয়ে ঈষৎ চ্যাপ্টাও হয়ে যায় কিছুক্ষেত্রে। এতে টায়ারের ব্যালেন্সিং সিস্টেমে খানিকটা তারতম্য ঘটতে পারে; যা কিছুটা ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

৪. ব্রেক সিস্টেমে সমস্যা

গাড়ি বসিয়ে রাখলে ব্রেক ডিস্ক কিংবা ড্রামে মরিচা ধরতে পারে। আবার ব্রেক ফ্লুইডে আর্দ্রতা ঢুকে গেলে ব্রেকিং পারফরম্যান্সও কমে যায়, যা দুর্ঘটনার কারণও হতে পারে।

৫. অভ্যন্তরীণ ক্ষতি ও দুর্গন্ধ

গাড়ির ভেতরে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল না থাকলে আর্দ্রতা জমে ছত্রাক, ফাঙ্গাস বা বাজে গন্ধ তৈরি হতে পারে। সিট কাভার ও ট্যাংক কিংবা ড্যাশবোর্ডেও স্থায়ী দাগ বা ক্ষতি দেখা দিতে পারে।

৬. ইঁদুর বা পোকামাকড়ের সমস্যা

অচল গাড়ি অনেক সময় ইঁদুর বা পোকামাকড়ের আড্ডাখানা হয়ে যায়। তারা তার কেটে ফেলতে পারে বা ভেতরে বাসা বাঁধতে পারে, যা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।


গাড়ি বসিয়ে রাখলে কী করবেন?

  • অন্তত সপ্তাহে একবার ১০–১৫ মিনিট গাড়ি চালান।
  • টায়ারের এয়ার প্রেশার ঠিক আছে কি না দেখুন।
  • ব্যাটারি মাঝে মাঝে চার্জ দিন বা ডিসকানেক্ট করে রাখুন।
  • কভার ব্যবহার করুন, তবে বাতাস চলাচলের সুবিধা থাকে এমন কভার ব্যবহার করুন।
  • ব্রেক ও অন্যান্য ফ্লুইড নিয়মিত চেক করুন।

ডিএ