দুর্ঘটনা এড়াতে রাতে যেসব নিয়ম মেনে চলবেন
ছবি : এইআই ।
অন্ধকারাচ্ছন্ন রাতে গাড়ি চালানো দিনের বেলার চেয়ে অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। কুয়াশা, রাস্তার লুকানো বিপদ, হেডলাইটের চোখ ধাঁধানো আলো, আর অসতর্ক চালকদের কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।
তবে কয়েকটি সহজ ও জরুরি পদক্ষেপ মেনে চললে আপনি যেমন নিরাপদ থাকবেন, তেমনি অন্যদেরও বিপদমুক্ত রাখতে পারবেন। বিশেষ করে যারা রাতে নিয়মিত গাড়ি চালান, তাদের জন্য এই নির্দেশনাগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বিজ্ঞাপন
দুর্ঘটনা এড়াতে রাতে যেসব নিয়ম মেনে চলবেন-
১. ক্লান্ত শরীরে স্টিয়ারিং নয় : গাড়ির অ্যাকসিডেন্টের অন্যতম প্রধান কারণ হলো তন্দ্রাচ্ছন্নতা বা ক্লান্তি। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন সংস্থার গবেষণা বলছে, মহাসড়কের দুর্ঘটনার প্রায় এক-পঞ্চমাংশের কারণ চালকের ঘুমিয়ে যাওয়া। দিনের বেলা হোক বা রাত—ক্লান্ত শরীরে গাড়ি চালালে মনোযোগ কমে যায়, আর প্রতিক্রিয়ার গতি ধীর হয়ে আসে।
বিজ্ঞাপন
রাতের কম দৃশ্যমানতার সঙ্গে এই ক্লান্তি যুক্ত হলে ঝুঁকি চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। দীর্ঘ সফরের আগে প্রতি দুই ঘণ্টা পর পর ১৫ মিনিটের বিরতি রাখুন। সম্ভব হলে রাতারাতি যাত্রা না করে, পথে বিশ্রাম নিয়ে পরের দিন যাত্রা শুরু করুন।
২. হেডলাইট ব্যবহারের সঠিক নিয়ম জানুন : রাতের বেলা দৃশ্যমানতা বাড়াতে গাড়ির হাই-বিম বা ফুল লাইট খুবই কাজে আসে। তবে তা ব্যবহারের সঠিক নিয়ম মানতে হবে।
সামনে বা উল্টো দিক থেকে কোনো গাড়ি না এলে অন্ধকার, নির্জন রাস্তায় হেডলাইট ব্যবহার করুন। বৃষ্টি, কুয়াশা বা তুষারপাতের মতো খারাপ আবহাওয়ায় হাই-বিম ব্যবহার করলে আলো প্রতিফলিত হয়ে আপনারই দেখতে অসুবিধা হতে পারে। এমন অবস্থায় প্রয়োজনে গাড়ি থামিয়ে আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ার অপেক্ষা করুন।
৩. কাঁচ রাখুন ঝকঝকে পরিষ্কার : কথাটা আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ মনে হলেও রাতে নিরাপদে গাড়ি চালানোর জন্য উইন্ডস্ক্রিন পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত জরুরি। রাস্তার ছোটখাটো বিপদ বা পথচারীকে দূর থেকে দেখতে পরিষ্কার কাঁচের বিকল্প নেই। ভেতরের ও বাইরের দিক দুটোই ভালো করে মুছে নিন।
৪. গাড়ির ভেতরের আলো কমিয়ে দিন : আধুনিক গাড়িতে ডিসপ্লে স্ক্রিনসহ নানা ধরনের গ্যাজেট থাকে। রাতের বেলা এই লাইটগুলো আপনার মনোযোগ নষ্ট করতে পারে। ড্যাশবোর্ড বা ডিসপ্লে স্ক্রিনের আলো কমিয়ে রাখলে বাইরের রাস্তার দিকে মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হয়, আর চোখে অতিরিক্ত চাপও পড়ে না।
৫. গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণে বাড়তি নজর দিন : গাড়িকে ‘টিপ-টপ’ অবস্থায় রাখা সব সময়ই জরুরি। তবে রাতের ড্রাইভিংয়ের জন্য ব্রেক ও হেডলাইটের দিকে বিশেষ মনোযোগ দিন। ব্রেক প্যাড, টায়ার প্রেশার ও সব লাইট ঠিক আছে কি না, তা নিশ্চিত করুন। নিজে না পারলে বিশেষজ্ঞ মেকানিকের সাহায্য নিন। বছরে একবার গাড়ির ফুল সার্ভিসিং করানো উচিত।
৬. রাতে গাড়ি চালানোর অনুশীলন করুন : যদি রাতে গাড়ি চালাতে ভয় পান বা নার্ভাস হন, তবে একজন প্রশিক্ষিত ড্রাইভিং ইনস্ট্রাক্টরের সঙ্গে রাতের বেলা গাড়ি চালানোর অনুশীলন করতে পারেন। এতে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে এবং রাতে গাড়ি চালানোর বিশেষ কৌশলগুলোও শিখে নিতে পারবেন।
৭. পথচারী ও বন্যপ্রাণীর দিকে নজর দিন : রাতে শুধু অন্য গাড়ির দিকে নয়, পথচারী এবং রাস্তার পাশে হঠাৎ চলে আসা বন্যপ্রাণীর দিকেও নজর রাখা জরুরি। তাদেরও নিরাপদে রাখা আপনার দায়িত্ব। মাথা ঠান্ডা রেখে ও সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালালে আপনার রাতের ভ্রমণ নিরাপদ ও দুর্ঘটনাহীন হবে।
এমআইকে