বাইকের ক্লাচ প্লেট ভালো রাখবেন যেভাবে
বাইকপ্রেমী বা নিত্যদিনের বাইক ব্যবহারকারীদের জন্য একটি খুব সাধারণ অথচ ব্যয়বহুল সমস্যা হলো ক্লাচ প্লেট দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়া। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইঞ্জিনের পাওয়ার চাকা পর্যন্ত পৌঁছানোর এই গুরুত্বপূর্ণ অংশটি খারাপ হওয়ার পেছনে কারিগরি ত্রুটির চেয়েও বেশি দায়ী চালকের কিছু স্বাভাবিক ভুল অভ্যাস। সময়মতো এই অভ্যাসগুলো না বদলালে বারবার নষ্ট হবে ক্লাচ প্লেট, যা পকেটে টান তো ফেলবেই, সাথে কমাবে বাইকের পারফরম্যান্স এবং ইঞ্জিনের আয়ু।
ক্লাচে হাত রেখে দীর্ঘ সময় চালানো
বিজ্ঞাপন
অনেক চালক, বিশেষ করে শহরের যানজটে, অভ্যাসবশত ক্লাচ লিভারে হাত রেখে বাইক চালান। এর ফলে অজান্তেই ক্লাচ প্লেট সামান্য হলেও চাপের ওপর থাকে। এর ফলে ক্লাচ প্লেটে অতিরিক্ত ঘর্ষণ ও তাপ তৈরি হয়; যা দ্রুত ক্লাচ প্লেট ক্ষয়ের প্রধান কারণ।
অপ্রয়োজনীয় হাফ-ক্লাচ ব্যবহার
বিজ্ঞাপন
ট্র্যাফিক সিগন্যালে বা সামান্য গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য দীর্ঘক্ষণ ধরে বাইকটিকে গিয়ারে রেখে শুধু হাফ-ক্লাচ ব্যবহার করা ক্লাচ প্লেটের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এই অভ্যাস প্লেটের আয়ু দ্রুত কমিয়ে দেয়।
ক্লাচ লিভারের সঠিক অ্যাডজাস্টমেন্টের গুরুত্ব
ক্লাচ লিভার যদি সঠিকভাবে অ্যাডজাস্ট করা না থাকে, তবে সেটি দ্রুত ক্লাচ প্লেটকে ক্ষয় করে দেয়। ক্লাচ লিভারের অ্যাডজাস্টমেন্ট ভুল হলে, আপনি যখন লিভারটি ছাড়েন, তখন ক্লাচ প্লেট সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হতে পারে না। এর ফলস্বরূপ, গিয়ার শিফটিং বা গিয়ার পরিবর্তনে সমস্যা দেখা দেয়। বাইকের ক্লাচ লিভার কখনো খুব বেশি টাইট কিংবা খুব বেশি ঢিলে রাখা উচিত নয়, বরং এর একটি নির্দিষ্ট 'ফ্রি-প্লে' বজায় রাখা জরুরি।
হার্ড গিয়ার শিফটিং
গিয়ার পরিবর্তনের সময় ক্লাচ পুরোপুরি না চেপে বা খুব দ্রুত রিলিজ করে গিয়ার শিফট করলে ক্লাচ প্লেটে অস্বাভাবিক চাপ পড়ে; যা ক্লাচ প্লেটের প্রচণ্ড ক্ষতি করে।
দ্রুত ডাউন শিফটিং
অনেকে দ্রুত গতি কমানোর জন্য ক্লাচ চেপে রেখেই পর পর গিয়ার নিচে নামিয়ে দেন। এই কাজ ক্লাচ সিস্টেমের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে।
সঠিক ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার না করা
ক্লাচ প্লেট ঠান্ডা রাখা ও মসৃণভাবে কাজ করার জন্য সঠিক গ্রেডের ও মানসম্পন্ন ইঞ্জিন অয়েল অপরিহার্য। নিম্নমানের বা ভুল গ্রেডের তেল ব্যবহার করলে ক্লাচ প্লেটে ঘর্ষণ বেড়ে গিয়ে সেটি দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, বাইক চালানোর সময় যতটা সম্ভব ক্লাচ লিভার থেকে হাত সরিয়ে রাখুন। শুধু গিয়ার পরিবর্তন বা বাইক থামানোর সময় ক্লাচ ব্যবহার করুন। ট্র্যাফিক জ্যামে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকলে গিয়ার নিউট্রাল করে দিন। নিয়মিত বিরতিতে ক্লাচ লিভারের 'ফ্রি-প্লে' বা সঠিক সেটিং পরীক্ষা করুন এবং অবশ্যই ভালো মানের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করুন।
যদি বাইক চালানোর সময় ইঞ্জিনের গতি অর্থাৎ আরপিএম বেড়ে যাওয়ার পরেও বাইকের গতি না বাড়ে, কিংবা গিয়ার পরিবর্তনের সময় অসুবিধা হয়, তবে বুঝতে হবে আপনার ক্লাচ প্লেট পরিবর্তন করার সময় এসেছে। সময় থাকতে সতর্ক হোন, আপনার বাইকের ক্লাচ প্লেটকে সুরক্ষিত রাখুন।
ডিএ