বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) দেশে অ্যাডভান্স প্যাসেঞ্জার ইনফরমেশন সিস্টেম (এপিআইএস) প্রতিষ্ঠার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে একটি চুক্তি (মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং) স্বাক্ষর করেছে।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের অধীনে সিস্টেমটি প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সিস্টেম সংস্থাপন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ সম্পাদন করবে আমিরাত সরকারের পূর্ণ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান আমিরাতস টেকনোলজিস সল্যুশনস এলএলসি এবং সহায়তায় থাকবে বহুজাতিক কোম্পানি সিটা। 

এ উপলক্ষে বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) বেবিচক সদর দপ্তরে একটি এমওইউ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের পক্ষে আমিরাতস টেকনোলজিস সল্যুশনস এলএলসি-এর নির্বাহী পরিচালক বি এস নাথ চুক্তি স্বাক্ষর করেন। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। চুক্তিটি স্বাক্ষর হওয়ায় প্রতিমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন। চুক্তিটি বাস্তবায়নে তিনি সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত ও আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন সংস্থার (ইকাও) মানদণ্ড অনুসারে অ্যাডভান্স প্যাসেঞ্জার ইনফরমেশন সিস্টেম প্রতিষ্ঠা সদস্য রাষ্ট্রগুলোর জন্য বাধ্যতামূলক। সিস্টেমটির প্রধান ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

এছাড়া জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও এ সিস্টেমের উপাত্ত ব্যবহার করতে পারবে। সিস্টেমটির সঙ্গে প্যাসেঞ্জার নেম রেকর্ড (পিএনআর) এবং ইলেকট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন (ইটিএ) প্রযুক্তিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এপিআইএসের মাধ্যমে বাংলাদেশে আগমনকারী যাত্রী ও ক্রুদের পরিচিতিমূলক তথ্যাদি ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে আগাম ও রিয়েল টাইমে ইমিগ্রেশন কর্তৃক্ষের কাছে আসবে। সিস্টেমটি প্রাপ্ত যাত্রী-তথ্যাদি এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ওয়াচলিস্টের ভিত্তিতে ঝুঁকি বিশ্লেষণ করতে সক্ষম।

এই ঝুঁকি বিশ্লেষণের পরিসর অত্যন্ত ব্যাপক, নাম ও অন্যান্য তথ্যাদির বানানে সম্ভাব্য পার্থক্যগুলোও বিশ্লেষণে বিবেচিত হয়। ফলে অনাকাঙ্ক্ষিত বা বিপদজনক যাত্রীর আগমনের বিপরীতে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ আগাম প্রস্তুতির সময় পাবে এবং এমনকি বিদেশের বিমানবন্দরে বোর্ডিংয়ের সময় চিহ্নিত যাত্রীর যাত্রাও বাতিল করতে পারবে। এতে করে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম যাত্রীর উড্ডয়ন বন্দরে সম্প্রসারিত হবে। সিস্টেমটি প্রবর্তিত হলে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস ও অপরাধ দমন সহজতর হবে।

এছাড়া অর্থপাচার, মাদক চোরাচালান ও মানবপাচার প্রতিরোধেও সিস্টেমটি সহায়ক হবে। একই সঙ্গে নিরীহ সাধারণ যাত্রীদের ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস ছাড় কার্যক্রম দ্রুত ও সহজতর হবে।

এআর/জেডএস