সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা চান ঢাবির বিজ্ঞান শিক্ষার্থীরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজ্ঞান অনুষদে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মুরসালিন অনুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, অমর একুশে হলের সাবেক ভিপি হোসাইন আহমদ সোহান, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও শহীদুল্লাহ হলের সাবেক জিএস ইরফানুল হক সৌরভ প্রমুখ।

মানববন্ধনে মুরসালিন অনু বলেন, আমরা দেখেছি পরীক্ষার ফল প্রকাশে ছয় থেকে সাত মাস সময় লেগে যায়। পরবর্তী বর্ষে দীর্ঘসময় ক্লাস, ইনকোর্স পরীক্ষায় অংশগ্রহণ, অ্যাসাইনমেন্ট করার পর শিক্ষার্থীরা জানতে পারেন যে তারা অকৃতকার্য। এ বছর প্রথম বর্ষের ফল দুইমাসের মধ্যে প্রকাশ হলেও অন্যান্য বর্ষগুলোর ফল প্রকাশে প্রতিবছরের মত বিলম্ব হয়েছে। করোনার কারণে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের এক বছর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তার ওপর পুনরায় ভর্তি নিতে হলে আমাদের দুইটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাবর্ষ নষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি মানসিকভাবে আমাদের দুর্বল করছে।

অমর একুশে হলের সাবেক ভিপি হোসাইন আহমদ সোহান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী দুই মাসের মধ্যে ফল প্রকাশের কথা থাকলেও বিজ্ঞান অনুষদের কয়েকটি বিভাগের পাঁচ থেকে সাত মাস সময় লেগে যায়। শত বছরের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনো ফল প্রকাশ করতে এতটা সময় লাগে? শিক্ষার্থীদের অনার্স শেষ করতে ছয় থেকে সাত বছর লেগে যায়। কিন্তু পরিবার তাকিয়ে থাকে, কবে ছেলের পড়ালেখা শেষ হবে। আমরা এর সমাধান চাই। কোনো সুষ্ঠু সমাধান যদি না দেওয়া হয়, তবে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেওয়া হবে।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও শহীদুল্লাহ হলের সাবেক জিএস ইরফানুল হক সৌরভ বলেন, আমাদের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসেন। একটি বিষয়ে অকৃতকার্য হলে তাকে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হয়, তাও আবার পরীক্ষা দিতে পারেন এক বছর পর। আমাদের জন্য সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। এভাবে আমাদের জীবন থেকে দুই থেকে তিন বছর নষ্ট হয়ে যায়। এই দায় কার? এসব সমস্যার জন্য আমাদের আন্দোলন করতে হবে? পিএইচডি ডিগ্রিধারী শিক্ষকরা কি আমাদের সমস্যা বুঝেন না?

ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীদের এটি কোনো সাময়িক সমস্যা নয়, এ দাবি নিয়ে আমরা গতবছরও মানববন্ধন করেছি। আমরা জানি, বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীদের ফল পেতে ছয় থেকে সাতমাস বিলম্ব হয়। আবার একজন শিক্ষার্থী যখন ছয়মাস ক্লাস করার পর জানতে পারেন যে তিনি অকৃতকার্য হয়েছেন। তখন তাকে আবার আগের বর্ষের ক্লাস করতে হয়। এসব সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিপাকে ফেলছে প্রশাসন।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, বিলম্বে ফল ঘোষণা করা বিভাগগুলোতে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করুন। আর পরবর্তী সময়ে যেন ফল প্রকাশে বিলম্ব না হয় সে ব্যবস্থা নিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি দাবি মেনে না নেয়, শিক্ষার্থীদের প্রতি সহানুভূতি না দেখায়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের নিয়ে আন্দোলনে যাবে।

আরএইচ/এমএইচএস