কুবিতে চূড়ান্ত পরীক্ষার উত্তরপত্র উধাও
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) গণিত বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের চতুর্থ সেমিস্টার চূড়ান্ত পরীক্ষার উত্তরপত্র পাওয়া যাচ্ছে না। পরীক্ষা শেষ হওয়ার দীর্ঘদিন পার হলেও ফলাফল আটকে থাকায় বিপাকে পড়েছেন ওই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এ ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের একটি কমিটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জানা যায়, গত বছরের ১ মার্চ গণিত বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ‘এটিএইচ-২২১: রিয়াল অ্যানালাইসিস-২’ শীর্ষক কোর্সের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা শেষে উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য কোর্স শিক্ষক ও গণিত বিভাগের প্রভাষক আতিকুর রহমানকে উত্তরপত্র বুঝিয়ে দেওয়া হয়। উত্তরপত্র মূল্যায়ন শেষে নম্বরপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষানিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে জমা দেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
কিন্তু বহিঃপরীক্ষকের নিকট প্রেরণের জন্য উত্তরপত্র পরীক্ষানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে জমা হওয়ার কথা থাকলেও তা জমা হয়নি। নিয়মানুযায়ী সংশ্লিষ্ট কোর্স শিক্ষক উত্তরপত্র মূল্যায়ন করে সেগুলো পরীক্ষানিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে জমা দেন। এরপর বহিঃপরীক্ষকের নিকট মূল্যায়নের জন্য উত্তরপত্র প্রেরণ করা হয়।
কিন্তু পরীক্ষানিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাচের অন্য কোর্সের উত্তরপত্র পাওয়া গেলেও এ কোর্সের উত্তরপত্র পাওয়া যায়নি। এমনকি উত্তরপত্র জমাদানের রেজিস্ট্রি খাতায়ও ওই কোর্সের বিপরীতে কোর্স শিক্ষকের কোনো স্বাক্ষর পাওয়া যায়নি।
বিজ্ঞাপন
এদিকে উত্তরপত্র না পাওয়ার কারণে সংশ্লিষ্ট ব্যাচের ফলাফল প্রকাশ করা যাচ্ছে না। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামানকে আহ্বায়ক, পরীক্ষানিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ নুরুল করিম চৌধুরীকে সদস্য সচিব, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী এবং গণিত বিভাগের প্রধান খলিফা মোহাম্মদ হেলালকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
পরীক্ষানিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ নুরুল করিম চৌধুরী বলেন, আমরা উত্তরপত্র, নম্বরপত্র সবকিছু রেজিস্ট্রার অনুসরণ করে জমা নেই। সংশ্লিষ্ট কোর্সের ক্ষেত্রে এ শিক্ষক আমাদের বলেছেন উনি উত্তরপত্র একজন অফিস সহায়কের মাধ্যমে পাঠিয়েছেন। কিন্তু এ কোর্সের উত্তরপত্র জমা হওয়ার কোনো রেকর্ড আমরা পাইনি। তবে নিয়মানুযায়ী উত্তরপত্র, নম্বরপত্র সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে সশরীরে পরীক্ষানিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে জমা করতে হয়।
তবে উত্তরপত্র হারিয়ে ফেলার অভিযোগ অস্বীকার করে কোর্সের শিক্ষক আতিকুর রহমান বলেন, আমি পরীক্ষার উত্তরপত্র ও নম্বর একত্রে বিভাগের অফিস সহায়কের মাধ্যমে পরীক্ষানিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে পাঠিয়েছি। আমার কাছে নম্বরপত্র জমা দেওয়ার রিসিভ কপি আছে।
এ বিষয়ে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি সংশ্লিষ্ট কোর্সের বহিঃপরীক্ষকের নাম্বার পাইনি, তবে অভ্যন্তরীণ পরীক্ষকের নম্বর পেয়েছি। উত্তরপত্রের বিষয়ে পরীক্ষানিয়ন্ত্রকের কার্যালয় বলতে পারবে।
গণিত বিভাগের প্রধান খলিফা মোহাম্মদ হেলাল বলেন, একাডেমিক কাউন্সিলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে একটি কমিটি করা হয়, কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে বিভাগ ব্যবস্থা নেবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, ঘটনাটি তদন্তে চার সদস্যের কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে সংশ্লিষ্ট কোর্সের পরীক্ষা এবং শিক্ষকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এমএসআর