ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে ঢাবি শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি স্থগিত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ সেশনের ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে হিজড়া বোঝাতে ‘ট্রান্সজেন্ডার’ শব্দের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে সৃষ্টি হওয়া বিতর্ক নিরসনে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে প্রশাসন। সেখানে কেবলমাত্র জন্মগতভাবে লিঙ্গ বৈচিত্র্যের অধিকারী শিক্ষার্থীরা ট্রান্সজেন্ডার/হিজড়া কোটায় ভর্তির আবেদন করতে পারবেন বলে উল্লেখ করা হয়। এ ক্ষেত্রে সমাজসেবা অধিদপ্তর প্রদত্ত হিজড়া পরিচয়পত্র দাখিলের বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছে প্রশাসন। এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচি সাময়িক স্থগিত ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে আইন বিভাগের ২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত জাকারিয়া, আরবি বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী আবিদ হাসান রাফি, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী এবি যুবাইর ও বাংলা বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ কর্তৃক এক বিবৃতিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা মনে করি ট্রান্সজেন্ডার শব্দটি নিয়ে এখনো বিভ্রান্তির সুযোগ রয়েছে। তাই সে বিভ্রান্তি নিরসনে অবিলম্বে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি থেকে এই ট্রান্সজেন্ডার শব্দটি প্রত্যাহার জরুরি। কেননা পৃথিবীর প্রায় সকল অভিধান ট্রান্সজেন্ডার শব্দের যে ব্যাখ্যা দিয়েছে তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যাখ্যার সম্পূর্ণ বিপরীত।
বিজ্ঞাপন
তারা বলেন, আমরা অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করে প্রক্টর স্যারের সঙ্গে দেখা করেছি। দেখা করে এই বিভ্রান্তি নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে উন্মুক্ত আলোচনায় বসার জন্য সময় চেয়েছি। তিনি আমাদের বলেছেন, নির্বাচনের পরে তিনি আমাদের সঙ্গে এ বিষয়ে উন্মুক্ত আলোচনার ব্যবস্থা করবেন। আমরা সেই উন্মুক্ত আলোচনার পূর্ব পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাই।
বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, উক্ত আলোচনায় যদি এই বিতর্কের অবসান না হয় তাহলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা চতুর্থ দফায় পূর্বোক্ত কর্মসূচির চেয়েও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে। আমরা আশা রাখি, এই উন্মুক্ত আলোচনার মাধ্যমেই চলমান বিতর্কের নিরসন সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য,উল্লেখ্য, এর আগে গত ২১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি থেকে ‘ট্রান্সজেন্ডার’ শব্দ অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। এ সময় ট্রান্সজেন্ডার শব্দ দ্বারা ‘হিজড়া’ সম্প্রদায়কে বুঝানো হয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
গত ৩০ ডিসেম্বর বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষায় ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাতিলসহ আরও তিন দফা দাবি তোলেন।
কিন্তু এ নিয়ে প্রশাসন লিখিত নিশ্চয়তা এবং ট্রান্সজেন্ডার শব্দ বাতিল না করায় গতকাল (মঙ্গলবার) পুনরায় অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরে বিকেল ৫টায় উপাচার্যের নেতৃত্বে ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে মিটিং করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু সন্ধ্যা ৬টার আগে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় সন্ধ্যার পরে ‘গণ অবস্থান কর্মসূচি’ ঘোষণা করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
কেএইচ/এসকেডি