রাবিতে দুই দিনব্যাপী ‘আনর্ত’ নাট্যমেলা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) দ্বিতীয়বারের মতো শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী আনর্ত নাট্যমেলা-২০২৪। এতে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশ ও ভারত থেকে আসা অনেক নাট্যকার।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনের সামনে মেলার উদ্বোধন করেন প্রখ্যাত বাংলাদেশি নাট্যকার, অভিনেতা ও নাট্য পরিচালক মামুনুর রশীদ।
বিজ্ঞাপন
উদ্বোধনকালে মামুনুর রশীদ বলেন, নাট্যকর্মী এবং তাদের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি আজকের এই শীতের সকালকে উষ্ণ করে দিয়েছে। কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ বিভিন্ন দূরদূরান্ত থেকে নাট্যকর্মীরা এসেছেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা এক সাংস্কৃতিক রাষ্ট্র তৈরি করেছিলাম। কিন্তু সেই সাংস্কৃতিক রাষ্ট্রটি এখন আর সংস্কৃতির হাতে নেই। চলে গেছে রাজনীতির হাতে। তারপরও আজকে আনর্ত নাট্যকর্মীদের একত্রিত করে যে সাহসিকতার প্রমাণ দিয়েছে তা গৌরব ও আনন্দের বিষয়।
বিজ্ঞাপন
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকার ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক বীর মুক্তিযোদ্ধা মলয় কুমার ভৌমিক বলেন, আজ পুরো পৃথিবীতে মানুষের সংকট। স্বয়ং ব্রহ্মা যখন বলছেন আমি আর দেবতা নই, আমি মানুষ তখন আমরা মানুষ খুঁজে বেড়াচ্ছি। বর্তমানে আমরা থেকে আমি হয়ে যাচ্ছি। সেই জায়গায় আনর্ত নাট্যমেলা ও আনর্ত পত্রিকার সম্পাদক চেষ্টা করে যাচ্ছেন আমরা যেন আবার আমাদের নাট্যিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আমি থেকে আমরা হয়ে যাই।
অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, নাটক আমাদের সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার। আমাদের মনোজাগতিক পরিবর্তনে বাঙালির যে লোকায়িত সাহিত্য-সংস্কৃতি তা যদি আমরা গথিত করতে পারি তাহলে আমার মনে হয় আমরা আবার আমাদের বাঙালির সংস্কৃতিতে ফিরে আসতে পারব। যা বিশ্বে অন্য এবং অনন্য প্রাচীনতম সংস্কৃতি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও অধ্যাপক হুমায়ুন কবীর, কোষাধ্যক্ষ মো. অবায়দুর রহমান প্রামানিক, প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক, আনর্ত পত্রিকার সম্পাদক রহমান রাজু, চলচ্চিত্র অভিনেতা তারিক আনাম খান, অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস, নাট্যনির্মাতা সালাউদ্দিন লাভলু প্রমুখ।
উদ্বোধন শেষে একটি ছোট নাটক পরিবেশন করা হয়। এরপর সেখান থেকে একটি র্যালি বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে।
এবারের আনর্ত নাট্যমেলায় থিয়েটারের ‘প্রত্যক্ষ’ ও ‘নেপথ্য’ শাখায় তিনজনকে আনর্ত স্বীকৃতি (পুরস্কার) দেওয়া হবে। এর মধ্যে যাত্রা শিল্পে প্রত্যক্ষ অবদানের জন্য মনোনীত হয়েছেন জ্যোৎস্না বিশ্বাস। যিনি যাত্রা সম্রাট অমলেন্দু বিশ্বাসের স্ত্রী এবং চলচ্চিত্র নায়িকা অরুনা বিশ্বাসের মা। জ্যোৎস্না বিশ্বাস ২ হাজারের বেশি যাত্রায় সরাসরি অভিনয় ও ৩০টিতে প্রত্যক্ষ অবদান রেখেছেন।
জুবায়ের জিসান/এমজেইউ