মায়ের দেওয়া কিডনিও বিকলের পথে, সুস্থ হতে সহযোগিতার দরকার জাহিদের
নিজের দুটি কিডনিই বিকল হয়ে যাওয়ার পর মায়ের দেওয়া একটি কিডনিতে প্রাণ ফিরে পান জাহিদ হাসান। মায়ের সেই কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রায় দুই বছর পর আবারও প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনির সমস্যা দেখা দিয়েছে তার। ডাক্তার জানিয়েছেন, দ্রুত উন্নত চিকিৎসা নিলে সম্পূর্ণভাবে নিরাময় হওয়া সম্ভব। তা না হলে আবারও কিডনি বিকল হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
জাহিদ হাসানের বাড়ি পঞ্চগড় সদর থানার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের ঠেকরপাড়া গ্রামে। বাবা নুরুন্নবী গাড়ি চালাতেন। ২০০৪ সালে তিনি এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এরপর জাহিদের বড় বোন একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে পরিবারকে সহযোগিতা করছেন। জাহিদ হাসান বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করে চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বিজ্ঞাপন
জাহিদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে বাড়িতে ফিরে অসুস্থ হন জাহিদ। এরপর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তারের পরামর্শে পরীক্ষা নিরীক্ষায় তার দুইটি কিডনি বিকল বলে জানতে পারেন। হাসপাতালে কিছুদিন থাকার পর জাহিদকে ওই বছরের ৩ নভেম্বর ঢাকার শ্যামলীতে সেন্টার ফর কিডনি ডিজিস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে (সিকেডি) ভর্তি করা হয়। এর কয়েকমাস পর ২০২২ সালের ২২ জানুয়ারি রাতে অস্ত্রোপচারে জাহিদের মায়ের শরীর থেকে জাহিদের শরীরে একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়।
জাহিদ হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার কিডনি দুটি নষ্ট হওয়ার পর মায়ের দেওয়া একটি কিডনিতে আবারও নতুন জীবন পেয়েছি। এখন এ কিডনিতে প্রাথমিক পর্যায়ের সমস্যা দেখা দিয়েছে। ডাক্তার বলেছেন, এখনই চিকিৎসা নিলে সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া সম্ভব। এতে ওষুধ বাবদ প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হবে। এ ছাড়া ভারত যাতায়াত ও আনুষঙ্গিক খরচ তো রয়েছেই। কিন্তু আমার পরিবারের পক্ষে এ ব্যয় বহন করার মতো সামর্থ্য নেই। ইতোমধ্যে চিকিৎসায় আমার বাড়ি ভিটা বিক্রি করতে হয়েছে। এখন নিজের আশ্রয় বলতে আমার আর কিছুই নেই। বোনের বাড়ি থেকে জীবন পার করছি।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, এর আগে মায়ের দেওয়া কিডনি প্রতিস্থাপন ও চিকিৎসা করাতে ৭ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আমার পরিবারের সম্বল ও অনেক মানুষের দেওয়া সাহায্যে সেবার সফলভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন হয়েছে। এ জন্য সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সকলের কাছে মিনতি করছি মায়ের দেওয়া কিডনি সুরক্ষার চিকিৎসায় আরও একবার এগিয়ে আসুন। আমাকে সহযোগিতা করুন।
জাহিদের বড় বোন নুর নাহার বলেন, ২০২২ সালের ২২ জানুয়ারি রাতে মায়ের কিডনি ভাইয়ের শরীরে দেওয়া হয়। অনেকের সহযোগিতায় সে যাত্রায় ভাই বেঁচে ফেরেন। কিন্তু এবার দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আমরা আর চিকিৎসার খরচ চালাতে পারছি না। কিডনি প্রতিস্থাপনের পর থেকেই জাহিদের প্রতিমাসে প্রায় ১৫ হাজার টাকার ওষুধ লাগে। প্রতি তিন মাস অন্তর চেকআপে খরচ হয় প্রায় ৩০ হাজার টাকা।
পঞ্চগড় সদর থানার হাফিজাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মাহাতাব প্রধান বলেন, জাহিদ ভালো ছেলে। হঠাৎ করে জানতে পারি তার কিডনি সমস্যা হয়েছে। আমরাও সহযোগিতা করেছি। তার সুস্থতা কামনা করছি।
মানবিক বিষয়টি বিবেচনা করে তার জীবন বাঁচাতে এগিয়ে আসতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তার পরিবারের সদস্যরা।
সাহায্য পাঠাতে পারেন জাহিদের নম্বরে : 01751000998 (বিকাশ/নগদ/রকেট)
শিপন তালুকদার/এএএ