প্রক্টরিয়াল বডি ও ছাত্রলীগের বাধায় কোটাবিরোধী আন্দোলন পণ্ড
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি ও শাখা ছাত্রলীগের বাধায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে যেতে পারেননি। ক্যাম্পাসের ফটকে যাওয়ার আগেই আন্দোলন পণ্ড হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে কোটা সংস্কারের দাবিতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বাইরে সড়কে উঠার চেষ্টা করলে বাধা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগ। এতে নিমিষেই ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে আন্দোলনকারীরা। এ সময় শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলে পড়ার অভিযোগ করে আন্দোলনকারীরা।
বিজ্ঞাপন
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আবু সাঈদ ও সামছুর রহমান সুমন বলেন, বরাবরের মতো আমরা কোটা সংস্কারের যৌক্তিক আন্দোলন করতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সমবেত হয়েছিলাম। বিকেল ৫টার দিকে আমাদের শান্তিপূর্ণ র্যালিটি ক্যাম্পাস চত্বর অতিক্রম করে পার্কের মোড়ের অভিমুখে যেতে চাইলে ছাত্রলীগের ছেলেরা ক্যাম্পাসেই গতিপথ রোধ করে বাধা দেয়। শান্তিপূর্ণভাবে র্যালিটি সমাপ্ত করতে চাইলে তারা আমাদের ওপর হামলে পড়ে।
ছাত্রলীগের এমন আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে যৌক্তিক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেন তারা।
বিজ্ঞাপন
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করে বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম। আমাদের বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হওয়ার সময় ছাত্রলীগ আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। আমাদের মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এর আগে আমাদের প্রক্টরিয়াল বডি ও শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান শামীম আন্দোলন না করার নির্দেশ দেন।
এই বিষয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া বলেন, ছাত্রদের আন্দোলনের সঙ্গে আমরাও একমত। তবে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বহিরাগত কিছু কুচক্রীয় মহল প্রবেশ করেছে এমন সংবাদ আমরা পেয়েছি। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে ক্যাম্পাসের মধ্যেই তাদের আন্দোলন সীমাবদ্ধ রাখার আহ্বান করেছি। তাদের ওপর কোনোরূপ হামলে পড়ার ঘটনা ঘটেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শরিফুল ইসলাম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে তাদের আন্দোলন ক্যাম্পাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে বলা হয়েছিল। প্রথমে তারা উত্তেজিত হলেও পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা আমাদের কথা শুনে আন্দোলনকে ক্যাম্পাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে সমাপ্ত করেছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে শান্ত রাখা এবং কোনোপ্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ক্যাম্পাসজুড়ে নীরব ভূমিকায় ছিল পুলিশ।
এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন জানান, কোটা আন্দোলনের নামে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্ন ঘটাতে না পারে সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করেছিল পুলিশ। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ শান্ত রয়েছে।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/শিপন তালুকদার/এমজেইউ