কেরানীগঞ্জে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজের অগ্রগতির ক্ষেত্রে পদে পদে বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছি বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম। 

রোববার (১২ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় উপাচার্যের কনফারেন্স রুমে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের প্রকল্প ও অস্থায়ী আবাসনের অগ্রগতি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। 

উপাচার্য বলেন, বিগত সময়ে প্রকল্পের কাজে নানা ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ, ডিপিপিতে নানা অসংগতির কারণে আমাদের প্রকল্পের অর্থছাড় বন্ধ করা হয়েছে। সে কারণে প্রথম ফেইজের চলমান কাজসহ বাকি কাজের অগ্রগতি করা যাচ্ছে না। অর্থ ছাড়ের ব্যাপারে গত ২৭ নভেম্বর মন্ত্রণালয়ে চিঠি প্রদান করা হয়েছে, আশা করি খুব শীঘ্রই অর্থ ছাড়ের বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত আসবে। সেটা হলে আমাদের কাজের দৃশ্যমান অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাবে। 

লিখিত বক্তব্যে ড. রেজাউল করিম বলেন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাস প্রকল্পের কাজ সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তর করার জন্য বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সেনাবাহিনীকে সরাসরি কাজ দেওয়ার এখতিয়ার জবি প্রশাসন ও ইউজিসির নেই। জবি প্রশাসন ইতোমধ্যে ইউজিসিকে লিখিতভাবে আর্মড ফোর্সেস ডিভিশনে লিখিতভাবে আবেদন দেওয়ার অনুরোধ করেছে। সেনাবাহিনীর হাতে কাজ হস্তান্তর করার এখতিয়ার একমাত্র মন্ত্রণালয়ের। বর্তমান প্রশাসন সেনাবাহিনীর কাছে কাজ হস্তান্তরের ব্যাপারে যেখানে যা প্রয়োজন তা করা শুধু একটু সময়ের ব্যাপার। 

এখন পর্যন্ত প্রকল্পে যত ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে তা সঠিকভাবে তদন্ত করার ক্ষমতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হাতে নেই। ইউজিসিকে গত ২৪ নভেম্বর একটি চিঠি দিয়েছি তারা যেন একটি উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়।

অস্থায়ী আবাসনের বিষয়ে লিখিত বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, বাসা ভাড়া করে অস্থায়ী আবাসিক হল তৈরির জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট কমিটি ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক খোঁজাখুঁজি করে। দুই একটি ভবন পাওয়া গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়কে হলের জন্য ভাড়া দিতে সম্মত হয় না বাড়ির মালিকেরা। সে প্রেক্ষিতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন’ এর সহযোগিতায় একটি বাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়েছে সেখানে ৭০০ শিক্ষার্থীদের অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে আগামী এপ্রিল মাস নাগাদ।

গত মাসে চীন দূতাবাসের কর্মকর্তারা ক্যাম্পাসে এলে তাদের কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের হলগুলোর মধ্যে একটি হল তাদের অনুদানে করে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলে তারা মৌখিকভাবে সম্মতি হয়েছেন। সেটার কাজও আমাদের চলমান আছে। 

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দীন বলেন, বিগত দিনে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের প্রকল্পের কাজ নিয়ে এতো দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও কারও প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি। বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর দিনরাত এক করে কাজ করে যাচ্ছে। বিগত সময়ের দুর্নীতির অভিযোগ ও অদক্ষ ঠিকাদারদের কাছে কাজ দেওয়ায় বর্তমানে নানামুখী সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে বর্তমান প্রশাসন। একটু সময় লাগবে বিগত দিনের ঝঞ্ঝাট দূর করে প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি বৃদ্ধি করতে। আশা করি সবার সহযোগিতায় আমরা দ্বিতীয় ক্যাম্পাসটি একটি আলোর মুখ দেখতে পারবো। 

এর আগে সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তর, অস্থায়ী আবাসন শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতার দাবিতে গণঅনশন শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তিন দফা দাবিতে এ গণঅনশন শুরু করেন তারা। 

এমএল/এমএন