এবার আমরণ অনশনের ডাক কুয়েট শিক্ষার্থীদের
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদকে অপসারণের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আর এই সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেল ৩টা থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তারা।
রোববার (২০ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার দিকে ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টার চত্বরে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী সৈকত ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (আইইএম) বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী উপল।
বিজ্ঞাপন
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপল বলেন, আমরা কয়েকজন ঈদের পরে আন্দোলন থেকে আলোচনায় যাওয়ার ব্যাপারে রাজি ছিলাম। প্রশাসনকে অনুরোধ করেছিলাম দ্রুত হল খুলে দেন। অধিকাংশ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে আসলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। যদি ৫ দফা বাস্তবায়ন হয় বা নিশ্চয়তা পাওয়া যায়, পদত্যাগের দাবি থেকে সরে আসায় আমাদের আপত্তি ছিল না। কেন এক দফায়? কেন এক দফায় পৌঁছালাম?
অপর শিক্ষার্থী সৈকত বলেন, দমনপীড়নের আর কী বাকি রাখসে? আমরা বলতে পারি, এথিক্যালি কোনো ভুল কাজ করিনি।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের বলবো, আমরা আপনাদের হয়তো আমাদের অবস্থান বুঝাতে পারিনি, কমিউনিকেশন গ্যাপ ছিল, তা আমাদের ব্যর্থতা। তার জন্য দরকার হলে ক্ষমা চাইবো। কিন্তু আমরা সব শান্তিপূর্ণ আন্দোলনই করছি। বিল্ডিংয়ে তালা মারা বা মোমবাতি জ্বালানোর জন্য বহিষ্কার? আমাদের গুলি ছুড়বে, হলের নিচে এসে কোপায়ে পার পেয়ে যাবে, এইটা আমরা নিতে পারিনি দেখেই সামনে দাঁড়িয়েছি। আমরা ফ্রেন্ডদের নিয়ে হসপিটালে দৌড়াদৌড়ি করে গুলি দেখে আর এই অসহায়ত্ব নিতে পারিনি। ১৫ জুলাইয়েও আমরা ঢাবিতে আহত হয়েছি। পাশে দাঁড়ানো আমার ফ্রেন্ড ঝলকের মাথায় ৫ সেলাই লাগছে। জীবন আমাদের জুলাইয়ে যাত্রাবাড়ীতেই শেষ হয়ে যেতে পারতো। আমার কোলে কতজন যে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে, সেই ট্রমা আমি ভুলি নাই। ইনসাফের পক্ষে ছিলাম, জীবন এখন গেলেও আফসোস নাই। আমরা জুলাইয়ের সন্তান। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ সারা দেশে আমরা আন্দোলন করেছি, আহত হয়েছি, জেলে গেছি।
সৈকত বলেন, আমাদের দীর্ঘ দুই মাস ধরে চলা ন্যায্য আন্দোলনে একবারো ইন্টেরিম আলোচনা করেনি। হামলা মামলা বহিষ্কার দেওয়ার পরও এই উপাচার্যকে অপসারণ করেনি। আমরা ক্লান্ত, আমরা হতাশ, ব্যর্থ। আমাদের হাতে আর কিছু করার নেই। আমরা ইন্টেরিমকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিলাম। এই উপাচার্যকে অপসারণ না করা হলে এরপর আমরা আমরণ অনশনে বসবো। আমাদের আর দেওয়ার কিছু নেই, জীবনটা আছে, এটাই দিয়ে দেব।
মোহাম্মদ মিলন/আরএআর