রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে ‘পলিটিক্যাল সায়েন্স কনফারেন্স’ ২২ জুন
রাষ্ট্র সংস্কার বিষয়ে প্রথমবারের মতো আগামী ২২ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘পলিটিক্যাল সায়েন্স কনফারেন্স’। ‘গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে রাষ্ট্র সংস্কার’—এই বিষয়কে কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি শিক্ষক ও গবেষকদের কাছ থেকে গবেষণা প্রবন্ধ আহ্বান করা হয়েছে কনফারেন্সে।
সোমবার (১২ মে) বিকেল সাড়ে ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান কনফারেন্সের আহ্বায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে আগামী ২২ জুন সকাল ১০টায় কনফারেন্সটি শুরু হবে। শ্যাডো রিফর্ম কমিশনস এবং পলিটিক্যাল অ্যান্ড পলিসি সায়েন্স রিসার্চ ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এই কনফারেন্সের আয়োজন করছে।
বিজ্ঞাপন
টেকসই গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে রাষ্ট্র সংস্কারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রায় আট মাস ধরে কাজ করে আসছে ১১টি শ্যাডো রিফর্ম কমিশন। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এসব কমিশনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। কনফারেন্সে এই ১১টি কমিশন তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ১১টি ছায়া সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। রাষ্ট্র সংস্কারের ওপরে এটাই প্রথম কনফারেন্স। বিদেশে অবস্থানরত বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও যারা রাষ্ট্র সংস্কারে কাজ করছেন তারাও এই কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করবেন। ইতোমধ্যে একটি জাতীয় কনফারেন্স কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের সাথে সাংবাদিক, শিক্ষার্থী, গবেষক ও শিক্ষকরা কাজ করছেন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। ভবিষ্যতে যারা ক্ষমতায় আসবে তারা কীভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে তা এই ছায়া সংস্কার কমিশনের রিপোর্টে উল্লেখ থাকবে। সবগুলো কমিশনের রিপোর্ট আমরা ফাইনাল করেছি। আমরা জনমত নিচ্ছি। চূড়ান্ত রিপোর্টগুলো আমরা বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে রিভিউ করেছি। এখন বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলছি। এরপর আমরা ফাইনাল করে ফেলব। আমরা এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাষ্ট্র সংস্কারের ব্যাপারে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক স্কলারদের একত্র করছি।
ইতোমধ্যে কনফারেন্সের জন্য উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অ্যাবস্ট্রাক জমা পড়েছে বলে তিনি জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. নাছিমা খাতুন এই উদ্যোগের সফলতা কামনা করে বলেন, এই আয়োজন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগকে অনেক এগিয়ে নিয়ে যাবে।
অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ছায়া সংস্কার কমিশন সরকারি উদ্যোগে গঠিত সংস্কার কমিশন থেকে ব্যতিক্রম, কেননা সরকারের বিভিন্ন দায়বদ্ধতা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিভিন্ন মহলের প্রভাব থাকে। কিন্তু ছায়া সংস্কার কমিশনগুলোতে কাজ করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা, যাদের লক্ষ্য ছিল একান্তই অ্যাকাডেমিক। সেই জায়গা থেকে এই উদ্যোগ অধিকতর কার্যকরী।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান মেজবা-উল-আযম সওদাগর বলেন, বাংলাদেশে সংস্কার নিয়ে যে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে সেখানে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সম্পৃক্ততা খুব কম। আমরা ভাবছি, সংস্কারে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। সেই লক্ষ্য থেকে আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। এটি পুরোপুরি একটি অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম। তরুণ প্রজন্মের একটি বড় অংশ এই সব কমিশনে কাজ করছে।
কনফারেন্স বাস্তবায়নের জন্য ১১ সদস্যের কনফারেন্স কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন–বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. নাছিমা খাতুন, একই বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. স ম আলী রেজা, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম মতিনুর রহমান, কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান মেজবা-উল-আযম সওদাগর, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান সোহাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ রেজওয়ান হোসাইন এবং গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাদিয়া আফরিন।
এআইএস