চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চবির শিক্ষক হিসেবে প্রাপ্য সম্মান দিতে চেয়েছি। ড. ইউনূস আসলে সারা বিশ্ব দেখবে, আমরাও ফোকাসড হবো।

সোমবার (১২ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে চবির পঞ্চম সমাবর্তন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মোহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, ড. ইউনূসের ডিগ্রির অভাব নেই। তিনি পৃথিবীর নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে বক্তৃতা দিয়েছেন। কিন্তু তাকে বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকা হয় না। বাংলাদেশে তাকে সাক্ষ্য দিতে লিফ্‌ট বন্ধ অবস্থায় পায়ে হেঁটে আটতলায় ওঠানো হয়। এজন্য আমরা তাকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক হিসেবে প্রাপ্য সম্মান দিতে চেয়েছি৷ বিশ্ব দেখবে যে, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেছিলেন, সেখানে তাকে সম্মানিত করা হয়েছে। এতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও সম্মানিত হবেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অ্যাকাডেমিক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, পঞ্চম সমাবর্তন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মো. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী প্রমুখ।

চবির ইতিহাসে সর্ববৃহৎ সমাবর্তন

আগামী বুধবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন। এতে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এদিন তাকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডি. লিট ডিগ্রি দেওয়া হবে। চবির এই সমাবর্তনে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, বিদ্যুৎ ও খনিজ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূর জাহান বেগম ও ইউজিসি চেয়ারম্যান ড. এস. এম. এ. ফায়েজ উপস্থিত থাকবেন।

সমাবর্তনে ২২ হাজার ৫৮৬ শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দেওয়া হবে। এ ছাড়া এতে ৪২ জন পিএইচডি ও ৩৩ জনকে এমফিল ডিগ্রিধারী রয়েছেন। সমাবর্তনের প্রাক্কলিত বাজেট প্রায় ১৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় হয়েছে ৬ কোটি টাকা। সবচেয়ে বেশি খরচ প্যান্ডেল, সাজ-সজ্জা ও আবাসন ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে।

মানতে হবে যেসব নির্দেশনা

১৪ মে দুপুরের খাবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে কুপন জমা দিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও নির্দিষ্ট বুথ থেকে সংগ্রহ করতে হবে। এদিন অংশগ্রহণকারী সবাইকে দুপুর ১টার মধ্যে অনুষ্ঠানের মূল প্যান্ডেলে প্রবেশ করতে হবে এবং অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগে প্যান্ডেল ত্যাগ করা যাবে না। মূল অনুষ্ঠান দুপুর ২টায় শুরু হয়ে শেষ হবে বিকেল চারটায়। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ব্যাগ, ছাতা, ক্যামেরা, টেপরেকর্ডার বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস সঙ্গে আনা যাবে না।

গ্র্যাজুয়েটদের ব্যক্তিগত কোনো গাড়ি ১ নম্বর মূল গেট (হাটহাজারী রোড) থেকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে না। ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়ার জন্য ১ নম্বর গেইট থেকে বাসের ব্যবস্থা থাকবে। গ্র্যাজুয়েটদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ষোলশহর শপিং কমপ্লেক্স, নিউ মার্কেট, জামেয়াতুল ফালাহ, পলিটেকনিক মোড় থেকে ১০০টি বাসের ব্যবস্থা থাকবে। সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত বাসগুলো শহর থেকে ক্যাম্পাসে যাতায়াত করবে এবং ক্যাম্পাস থেকে ফিরতি বাসগুলো বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলবে।

শাটল ট্রেন বটতলী স্টেশন থেকে ৭টা ১৫ মিনিট ও ৭টা ৪০ মিনিট এবং ষোলশহর স্টেশন থেকে সাড়ে ৯টা, ১০টা ১৫ মিনিট ও সাড়ে ১১টায় ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্য ছেড়ে আসবে এবং ফিরতি ট্রেন ক্যাম্পাস থেকে ৪টা ৪০ মিনিট, ৬টা ২০ মিনিট ও ৯টা ৪৫ মিনিটে শহরের উদ্দেশ্য ছেড়ে যাবে।

এআইএস