প্রেমঘটিত কারণে হলের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী সাদ আহমেদ। তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের চার তলার ওপর থেকে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে লাফিয়ে নিচে পড়েন। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। 

বুধবার (২৫ জুন) রাত সোয়া ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তার দুই পা ভেঙে গেছে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

সাদ আহমেদ বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায়। তিনি কুরআনের একজন হাফেজ। আত্মহত্যার চেষ্টার আগে তিনি ফেসবুকে কয়েকটি পোস্ট করেন। সর্বশেষ ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ভালোবাসি লিসা'।

প্রেমিকা লিসাকে উদ্দেশ্য করে পোস্টে তিনি লেখেন, ‘লিসা তুমি জানতা তোমাকে আমি কত্তটা ভালোবাসি তবুও কেন এমন করলে? সব জায়গায় সেইম ইফোর্ট সেইম ডায়ালগ কীভাবে পারো লিসা? মানুষ এতটা সাইকো কীভাবে হয়? তোমাকে তো বলেই ছিলাম আমার সঙ্গে চিট করলে কিন্তু আমার বন্ধু ফিরোজের মতো আমাকেও মরা ছাড়া উপায় থাকবে না। এত্ত করে বুঝাইলাম তাও বুঝলে না।’

আরেকটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘সরি আম্মু পারলে মাফ করে দিও। তুমি আমার আম্মু ছিলা, তুমি আমার আব্বু ছিলা।
আর আমার বাপ একটা জানোয়ার।’

আরও একটি ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘সময়ের অভাব আর কষ্টের কারণে সব ভালোভাবে বলতে পারলাম না। আর হা আমার খুব ইচ্ছা আমার কবর হবে মসজিদের পাশে। যেখান থেকে আমি ইমামের তেলাওয়াত শুনতে পারবো। আর প্লিজ কেউ একটু আম্মুক দেইখেন ফাইনানসিয়ালি।’

এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আমি মাত্রই ছাদে উঠেছিলাম, ৩ তলায় উঠার পরে একজন জোরে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে এবং পরক্ষণেই হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। তারপর ওখান থেকে দৌড়ে এসে দেখি একজন মাটিতে পড়ে আছে। তার পায়ের অবস্থা খুবই খারাপ। দুই পাই ভেঙে গেছে মনে হয়। পরে অ্যাম্বুলেন্স এসে তাকে রামেকে নিয়ে যায়।

তার এক বন্ধু বলেন, ছেলেটা খুব সহজ সরল ছিলেন। তিনি কুরআনের হাফেজ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজও পড়তেন তিনি। তবে ওর কিছু আর্থিক সমস্যা ছিল এবং বাসায় সমস্যা ছিল।

অধ্যাপক মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, আমি বাইরে ছিলাম। ঘটনাটি শোনার পর হলে গিয়ে শুনতে পেলাম তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সে ফার্স্ট ব্লকের চারতলা থেকে লাফ দিয়েছিলেন। সম্ভবত তার একটা পা ভেঙে গেছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা ঘটনাটি শোনামাত্রই সেখানে অ্যাম্বুলেন্স পাঠাইছি। তাকে মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা বিস্তারিত কিছু জানতে পারিনি।

জুবায়ের জিসান/এমএন