ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (২০ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় কলাভবনের অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া লেকচার হলে 'স্মৃতিতে ভাস্বর রক্তাক্ত জুলাই : সাম্য ও মানবতার বাংলাদেশ' শিরোনামে এ সভার আয়োজন করা হয়।

পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শান্টু বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. দিলিপ কুমার বড়ুয়া। অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ছিলেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান। বিভাগের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন এবং প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হয়।

স্বাগত বক্তব্যে বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শান্টু বড়ুয়া বলেন, পৃথিবীর যাবতীয় যত সুন্দর সবকিছু আমাদের মহান শহীদদের, যারা আমাদের নতুন করে বাঁচার সুযোগ করে দিয়েছেন। ছাত্র শিক্ষক, সমাজের আপামোর জনসাধারণ যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শাহাদাৎ বরণ করেছেন তাদের জন্য হৃদয়ের গভীর অন্তস্থল থেকে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং যারা এখনো হাসপাতালের বেডে অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন তাদের আরোগ্য কামনা করছি।

তিনি বলেন, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা কিছুদিনের মধ্যেই হল বরাদ্দ পেয়ে যাবে। তারা নিজ নিজ রুমে অবস্থান করবে। আগে এমন চিত্র ছিল না বিশ্ববিদ্যালয়ে। নানা প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে শিক্ষার্থীদের হলে থাকতে হয়েছে। কিন্তু এখন চিত্র পাল্টে গেছে। শিক্ষার্থীরা তাদের বাকস্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমেই এটি সম্ভব হয়েছে।

কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বিগত দেড় দশকের বেশি সময় ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই ক্যাম্পাসের এক দুর্বিষহ সময় অতিবাহিত করেছে। আমরা জানি দেশে এক চরম ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থার প্রচলন ছিল। আমাদের দেশ থেকে গণতন্ত্রকে হরণ করা হয়েছিল। প্রহসন নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়েছিল। ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. দিলীপ কুমার বড়ুয়া বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের শিক্ষকরা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শিক্ষকদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে জুলাই বিপ্লবের সম্মুখে এসেছিলাম। জীবনের মায়া ত্যাগ করে সাদা দলের যেসব শিক্ষক জুলাই বিপ্লবের প্রেক্ষাপট সৃষ্টি করেছিলেন তাদের মধ্যে একজন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান। তিনি যেকোনো মুহূর্তে গ্রেপ্তার বা গুম হতে পারতেন।

তিনি আরো বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন, তাদের ফসল আমরা ভোগ করছি। তাদের অবদান আমরা কখনো ভুলতে পারবো না। 

স্মরণসভায় আরো উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. বেলুরানী বড়ুয়া, সহযোগী অধ্যাপক ড. শামীমা নাসরিন, সহকারী অধ্যাপক রত্না রানী দাস, সহকারী অধ্যাপক রোমানা পাপড়ি, প্রভাষক আফতাবুল ইসলাম তন্ময়সহ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এসএআর/জেডএস