ঢাবি শিক্ষক ড. নীলিমার স্থায়ী বহিষ্কার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নীলিমা আক্তারের বিরুদ্ধে বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, স্বৈরাচারের সহযোগী, জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে ‘মব’ সম্বোধন ও গণহত্যার পক্ষে বয়ান দেওয়ার অভিযোগ এনে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৩ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন এলাকা প্রদক্ষিণ করে সংশ্লিষ্ট বিভাগের পৌঁছে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এসময় অধ্যাপক ড. নীলিমা আক্তারকে তিরস্কার করে তারা বিভাগের দেয়ালে দেয়াল লিখন করেন।
বিজ্ঞাপন
বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন; দালালদের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘দালালদের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘১ ২ ৩ ৪, নীলিমা বহিষ্কার’, ‘জুলাইয়ের অপমান সইবো নারে সইবো না’, ‘স্বৈরাচারের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
এসময় ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা বলেন, ফ্যাসিজমের শিকড় সমূলে উৎপাটিত না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন থামবে না। যদি বিশ্ববিদ্যালয় স্বল্পসময়ের মধ্যে নীলিমা আক্তারের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়, আমরা কার্যকর ব্যবস্থা বলতে বুঝি স্থায়ী বহিষ্কার। না হলে তাকে ইংরেজি বিভাগ থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে। আমরা তাকে যেখানে পাব সেখানে তিরস্কার করব।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
বিক্ষোভ মিছিল শেষে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেন।
স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন, ড. নীলিমা আক্তার, যিনি আওয়ামীপন্থি নীল দলের সাবেক সিন্ডিকেট সদস্য, গত জুলাই মাস থেকে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে আসছেন। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো তিনি প্রতিনিয়ত শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানকে ‘মব’ বা উচ্ছৃঙ্খল জনতা বলে আখ্যায়িত করেন। এ ধরনের বক্তব্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে গভীর ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থি। গণঅভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীরা তার ক্লাসে বর্জন করলেও অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে বিভাগ থেকে তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, বরং তার প্রতি সমর্থন জানানো হয়েছে।
এছাড়া গতকাল ২২ জুলাই ড. নীলিমা আক্তার তার একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া স্ট্যাটাসে গত বছরের জুলাই থেকে আজ অবধি সব লাশের দায় ‘আন্দোলনকারীদের’ ওপর চাপিয়েছেন, যা অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত হলে দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন ও উসকানিমূলক মন্তব্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মনে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে এবং এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে তার নৈতিক অবস্থানের সম্পূর্ণ পরিপন্থি।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপিতে দুটি দাবি পেশ করেন। দাবিগুলো হলো–
১. ড. নীলিমা আক্তারকে অবিলম্বে ও স্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হোক।
২. তার বিতর্কিত বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডের জন্য একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
এসএআর/এসএসএইচ