এবার শ্বেতপত্রের দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মুখে কালো কাপড় বেঁধে মৌন অবস্থান কর্মসূচি করেছে শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কুরআন বিভাগের শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত ময়নাতদন্তের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবিতে এই কর্মসূচি করেছে শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৮ জুলাই) বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে তারা এই কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় তাদের হাতে বিভিন্ন লেখা সম্বলিত ফেস্টুন দেখা যায়।

কর্মসূচিতে ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের জারিন তাসমিন পুষ্প, আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের রেজাউল ইসলাম রাকিব, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের সাজ্জাদ সাব্বির, লোকপ্রশাসন বিভাগের বজলুর রহমান ও দাওয়া'হ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের আসাদুল্লাহসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, সাজিদ আব্দুল্লাহর মৃত্যু স্বাভাবিক কোনো মৃত্যু নয়। তাকে হত্যা করা হয়েছে। সাজিদের মরদেহ দীর্ঘসময় ভেসে থাকলেও সেখানে প্রশাসনের কাউকে পাওয়া যায়নি। তার মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানানোর সময়ও প্রশাসন লিখিত কোনো ডকুমেন্ট দিতে চাননি। এই প্রহসন আমরা মেনে নিতে পারছে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা তালবাহানা ও উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে। মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে প্রশাসনের কার্যকর কোনো পদক্ষেপও আমরা দেখছি না। আমরা অতিদ্রুত সাজিদের মৃত্যুর ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি জানাই।

সাজ্জাদ সাব্বির বলেন, আমাদের ভাই সাজিদ। তার এই রহস্যজনক মৃত্যুর আসল ঘটনা অবশ্যই উন্মোচন করতে হবে। এটা উদঘাটন না হলে আমরা যারা আছি আমাদেরও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হবে। আমরা সাজিদ হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত একই দাবিতে অটল থাকব।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুলাই বিকেল সাড়ে ৬টায় শাহ আজিজুর রহমান হলের পুকুর থেকে আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর থেকে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটনের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। ১৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল প্রশাসন থেকে দুইটি তদন্ত কমিটি করা হয়। ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে উভয় কমিটি। এদিকে এই ঘটনায় ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ ও পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পুকুরে নামা নিষিদ্ধ করে মাইকিং করেছে প্রশাসন। এর আগে ১৯ জুলাই সাজিদের মৃত্যুকে ‘হত্যাকাণ্ড’ দাবি করে সুষ্ঠু তদন্ত ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে টানা পাঁচ ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।

রাকিব হোসেন/এআইএস