বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে আলোচনায় বসেন প্রশাসন ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। চার ঘণ্টার আলোচনার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো খুলে বন্ধের আদেশ প্রত্যাহারসহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আজ (বুধবার) জরুরি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে সেই সিন্ডিকেট সভাটি অনুষ্ঠিত হয়নি। এর ফলে ক্যাম্পাস ও হলসমূহ খোলার বিষয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, গতকাল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনায় যেসব সিদ্ধান্ত ও দাবিতে আমরা একমত হয়েছিলাম, সেগুলো লিখিত আকারে সিন্ডিকেটে উত্থাপন করতে হবে। কিন্তু সেই লিখিত পত্রে স্বাক্ষর করতে আসার জন্য শিক্ষার্থীদের বলা হলেও তারা এখনও আসেননি। আমরা দীর্ঘক্ষণ ধরে তাদের জন্য অপেক্ষা করছি। এমতাবস্থায় সিন্ডিকেট মিটিংয়ে লিখিত কোনো কিছু পেশ করার সুযোগ না থাকায় আজ সিন্ডিকেট মিটিং আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।

ড. শহীদুল হক আরও বলেন, যেহেতু সিন্ডিকেট মিটিং হয়নি, সুতরাং গতকাল রাতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের কোনো কার্যকরিতা থাকবে না এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো বন্ধের আদেশ প্রত্যাহার করা সম্ভব হয়নি। এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের হাতে ন্যস্ত।

এ বিষয়ে আন্দোলনের অন্যতম মুখ্য শিক্ষার্থী পশুপালন অনুষদের এহসানুল হক হিমেল বলেন, স্যাররা আমাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছিলেন, আমরা মঙ্গলবার মিটিংয়ে যারা উপস্থিত ছিলাম তাদের সবাই স্বাক্ষর করেছি, তাহলে আবার নতুন করে কেন স্বাক্ষর করতে হবে। তাই আমরা তাদের কথার সঙ্গে একমত নয়। পরে কী কর্মসূচি হবে তা জানানো হবে সবার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে।

এর আগে, গতকার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ৪ ঘণ্টার অধিক সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের আলোচনা চলে। আলোচনায় যেসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল, সেগুলো হলো—সিন্ডিকেট মিটিংয়ের মাধ্যমে হল নোটিশ প্রত্যাহার করা হবে, আন্দোলনরত কোনো শিক্ষার্থী (সব ফ্যাকাল্টির) যাতে ভবিষ্যতে কোনো প্রকার অ্যাকাডেমিক বা প্রশাসনিক হেনস্তার শিকার না হয় সে বিষয়ে প্রশাসন কর্তৃক লিখিত স্টেটমেন্ট দেওয়া হবে, আগামী সাত দিনের মধ্যে ক্লাস ও পরীক্ষা পুনরায় শুরু করা হবে এবং এ বিষয়ে আগামীকাল বিকেল ৫টার মধ্যে লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করা হবে।

মুসাদ্দিকুল ইসলাম তানভীর/এএমকে