আবারও বহিরাগতদের হামলার শিকার নারীসহ বাকৃবির ২ শিক্ষার্থী
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীদের ওপর আবারও বহিরাগতদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এবার এক নারীসহ দুই শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়েছে। এতে একজন শিক্ষার্থী মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ কেয়ার সেন্টারে চিকিৎসা নিয়েছেন।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ ফাস্ট গেইট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন- কৃষি অনুষদের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্বের শিক্ষার্থী রাশিদুল আলম রিফাত ও নাহার।
বিজ্ঞাপন
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের খেলার মাঠ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার দাবিতে এলাকাবাসী সড়ক ব্যারিকেড দিয়ে মানববন্ধন করছিল। এ সময় রাশিদুল ও নাহার ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। পরে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে এলাকাবাসী তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে রাশিদুল মাথায় গুরুতর আঘাত পান এবং হেলথ কেয়ার সেন্টারে চিকিৎসা নেন। নারী শিক্ষার্থী নাহারকেও বেল্ট দিয়ে মারধর করা হয়।
রাশিদুল বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার সময় দেখি, রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে আন্দোলন চলছে। আমি বলি- আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ক্যাম্পাসে ঢুকতে চাই। আপনারা আন্দোলন করেন, কিন্তু অন্যের সমস্যা যেন না হয়। এতেই তারা বলে, আমি নাকি বেয়াদবি করেছি। এরপর ৬-৭ জন একসাথে আমাকে মারতে আসে। আইডি কার্ড দেখালেও তারা থামেনি।
বিজ্ঞাপন
শিক্ষার্থী নাহার বলেন, আমরা একসাথে ছিলাম। রাস্তা খুলে দিতে বললে তারা প্রথমে রাশিদুলকে মারধর করে। আমি ঠেকাতে গেলে তারা আমাকেও মারতে শুরু করে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের খেলার মাঠ দীর্ঘদিন ধরে বহিরাগত এলাকাবাসীর দখলে। এতে চুরি ও বিশৃঙ্খলার মতো ঘটনা ঘটছে। বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিলে, তারা শিক্ষক ও কলেজ উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এর প্রতিবাদে কলেজের অধ্যক্ষসহ শিক্ষক-কর্মচারীরা অনশনে বসেন। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে অনশন ভঙ্গ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আবদুল আলীম বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকে আমরা খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। দোষীদের চিহ্নিত করতে এলাকাবাসীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করার চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন
বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বরত সাব-ইন্সপেক্টর মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ঘটনার পর অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক, তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, এর আগেও গত ৩১ আগস্ট রাতে কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় বহিরাগতরা। তখনও ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় এবং কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও এ হামলার ঘটনা ঘটলো।
মুসাদ্দিকুল ইসলাম তানভীর/এআরবি