বিইউবিটি শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক স্বর্ণপদক জয়
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি (বিইউবিটি) শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত প্রকল্প ‘এগ্রো-ডক্টর’ মালয়েশিয়ার সেগি ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড কলেজেসে আয়োজিত সপ্তম ওয়ার্ল্ড ইনভেনশন কমপিটিশন অ্যান্ড এক্সিবিশন (ডব্লিউআইসিই) ২০২৫-এ স্বর্ণপদক জিতেছে। একই সঙ্গে তারা আইওয়াইএসএ স্পেশাল অ্যাওয়ার্ডও অর্জন করেছে।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর এ সাফল্যের পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দলটির সদস্যরা উপাচার্য প্রফেসর ড. এ বি এম শওকত আলীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. আবু সালেহ, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আলী আহমেদ, রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন-অর-রশিদ ও সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। সবাই শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস দেন।
বিজ্ঞাপন
বিইউবিটির উপাচার্য বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা দেখিয়ে দিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় দেশের পতাকা উড়াতে সক্ষম। এই স্বর্ণপদক শুধু বিইউবিটির নয়, পুরো বাংলাদেশের গর্ব।
ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর আবু সালেহ বলেন, এগ্রো-ডক্টর শুধু একটি উদ্ভাবন নয়, এটি কৃষিক্ষেত্রে ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা। এটি গ্রামীণ অর্থনীতি ও কৃষকদের জীবনে পরিবর্তন আনবে।
বিজ্ঞাপন
দলটির সদস্য মো. কামরুল ইসলাম তুহিন জানান, একই জমিতে বারবার চাষ ও পানির অপব্যবহারে মাটির উর্বরতা কমে যাচ্ছে, মাছ চাষেও ক্ষতি হচ্ছে। কৃষকদের এসব সমস্যার সমাধান হিসেবেই এসেছে ‘এগ্রো-ডক্টর’।
‘এগ্রো-ডক্টর’ কী?
এটি একটি স্মার্ট কৃষি সহায়ক ব্যবস্থা। মাটির পিএইচ, নাইট্রোজেন, ফসফরাসসহ নানা উপাদান পরিমাপ করে জানায় কোন ফসলে কতটুকু সার দরকার এবং কোন মৌসুমে চাষ উপযুক্ত। এর উন্নত সংস্করণ ‘এগ্রো-রোভার’ মাঠে গিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মাটির নমুনা সংগ্রহ করে অ্যাপের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক ফলাফল দেয়। এছাড়া কৃষকরা অ্যাপ ব্যবহার করে ফসল ও মাছের অবস্থা, শ্রমিক ভাড়া, কৃষি সরঞ্জাম অর্ডার এবং জমির তথ্য সংরক্ষণ করতে পারেন।
টিমে ছিলেন—আইওটি ও এমবেডেড সিস্টেমে কাজ করা মো. কামরুল ইসলাম তুহিন, ডিপ লার্নিং ও রোবোটিক্সে মো. শাখাওয়াত হোসেন, আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ফজলে রাব্বি, আইওটি-তে মো. শাহিরয়ার কবির মুন, আইওটি ও অ্যাপ ডেভেলপমেন্টে মো. সাব্বির হোসেন, পার্টস ম্যানেজমেন্টে মো. শাকিল, ডকুমেন্টেশন ও স্লাইডে মো. আসিফ আল আমিন। পুরো দলকে গবেষণায় দিকনির্দেশনা দেন মেন্টর মো. শাকিল হোসেন এবং উপদেষ্টা হিসেবে শুরু থেকেই পাশে ছিলেন সিএসই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুদীপ্ত চাকি।
এগ্রো-ডক্টর দল এর আগেও নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ এবং একাধিক আন্তর্জাতিক হ্যাকাথনে পুরস্কার জিতেছে। ডব্লিউআইসিই ২০২৫-এর স্বর্ণপদক তাদের সেই অর্জনের সর্বশেষ সংযোজন।
এই জয় প্রমাণ করে, গবেষণা ও প্রযুক্তিনির্ভর উদ্ভাবনে বাংলাদেশি তরুণরা বিশ্বমানের আসনে পৌঁছে যাচ্ছে।
এআইএস