রাকসু নির্বাচন: ‘সোচ্চার’-এর জরিপে তিন পদেই এগিয়ে ছাত্রশিবির
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন ২০২৫ (রাকসু) নেতৃত্ব নির্বাচনের জরিপ অনুযায়ী, ভিপি, জিএস ও এজিএস—এই তিন পদেই এগিয়ে আছে ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেল ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’। জরিপ অনুযায়ী, দ্বিতীয় অবস্থানে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এছাড়া তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাত ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই জরিপ তুলে ধরে জরিপ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি সংস্থা ‘সোচ্চার-টর্চার ওয়াচডগ বাংলাদেশ’।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে 'সোচ্চার'-এর জরিপ পরিচালনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে অংশ নেওয়া ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রিচি লিখিত বক্তব্যে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে তারা ১ হাজার ২৮৪ জন আবাসিক ও অনাবাসিক শিক্ষার্থীর মাঝে জরিপ পরিচালনা করেছেন। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৪০.৪ শতাংশ নারী, ১৩.২ শতাংশ অমুসলিম, ২.৩ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর (অবাঙালি) শিক্ষার্থী ছিলেন। এদের মধ্যে ৭৯.৬ শতাংশ শিক্ষার্থী রাকসুতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ছাত্রীদের মধ্যে এর হার ৬৯.৪ শতাংশ, ছাত্রদের মধ্যে ৮৬.৫ শতাংশ। ৮৫.৭ শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করেন নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। ৫৫.৭ শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করেন রাকসু নির্বাচনে ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনের ফলাফলের প্রভাব পড়বে।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৪০.৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর পছন্দ এমন প্যানেল, যেখানে রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র অ্যাক্টিভিস্টদের সমন্বয় আছে। প্যানেল নয়, যোগ্য প্রার্থী দেখে ভোট দেবেন ৮২.৩ শতাংশ ভোটার। ৭৭.৪ শতাংশ শিক্ষার্থী বলেছেন, ব্যক্তিগত পরিচয় বা দল মুখ্য নয়, তারা ভোট দেবেন যোগ্য প্রার্থীকে।
বিজ্ঞাপন
জরিপ অনুযায়ী, ছাত্রশিবির-সমর্থিত 'সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট' ভিপি পদে ৩৬.৫ শতাংশ, জিএস পদে ৩১.৭ শতাংশ এবং এজিএস পদে ৩৩.৯ শতাংশ ভোট পেয়েছে। ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেল 'ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম' ভিপি পদে ২.৩ শতাংশ, জিএস পদে ২.৬ শতাংশ এবং এজিএস পদে ৬.১ শতাংশ ভোট পেয়েছে। এছাড়া ভিপি পদে ১০.৩ শতাংশ, জিএস পদে ২০.১ শতাংশ এবং এজিএস পদে ১২.৩ শতাংশ শিক্ষার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থীকে ভোট দেবেন বলে মতামত জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, জরিপে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র অধিকার পরিষদ ভিপি পদে ১ শতাংশ, জিএস পদে ১.৯ শতাংশ, এজিএস পদে ১.২ শতাংশ; বাম সংগঠন ভিপি পদে ০.৩ শতাংশ, জিএস পদে ০.৫ শতাংশ, এজিএস পদে ০.৮ শতাংশ; ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ভিপি পদে ০.২ শতাংশ, জিএস পদে ০.৩ শতাংশ, এজিএস পদে ০.৩ শতাংশ; অন্যান্য দল ভিপি পদে ০.৫ শতাংশ, জিএস পদে ১.৩ শতাংশ, এজিএস পদে ০.৯ শতাংশকে ভোট দেওয়ার পক্ষে মতামত জানিয়েছেন।
তবে জরিপে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভিপি পদে ৪৯ শতাংশ, জিএস পদে ৪১.৭ শতাংশ এবং এজিএস পদে ৪৪.৫ শতাংশ ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো মতামত জানাননি।
এদিকে, 'সোচ্চার'-এর সঙ্গে ছাত্রশিবির-সমর্থিত 'সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট'-এর এজিএস পদপ্রার্থী সালমান সাব্বিরের সম্পৃক্ততা রয়েছে। জানা গেছে, তিনি এই সংগঠনের সাবেক সভাপতি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জরিপসংশ্লিষ্টরা বলেন, জরিপ পরিচালনায় 'সোচ্চার'-এর কোনো সদস্য জড়িত ছিল না। এক্ষেত্রে 'সোচ্চার'-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন ৩০ জন সাধারণ শিক্ষার্থী জরিপ পরিচালনা করেন। সেক্ষেত্রে এই জরিপ পক্ষপাতমূলক হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
জুবায়ের জিসান/এআইএস