ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের একটি কক্ষে শিক্ষার্থীর মাথার পাশে পলেস্তারা খসে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে অল্পের জন্য রক্ষা পান এই শিক্ষার্থী।

রোববার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে হলের ১৪২ নম্বর কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। সে সময় নিজ বিছানায় বসা ছিলেন ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ কাদির।

এ ধরনের ঘটনা এই হলে প্রায় সময় ঘটছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। 

সাজ্জাদ কাদির বলেন, আমি রুমে আমার বিছানায় বসা ছিলাম, হঠাৎ করেই পলেস্তারা খসে পড়ে। যদি আমি শুয়ে থাকতাম, নির্ঘাত আমার মাথায় পড়ত। বসে থাকায় পাশ দিয়ে পড়েছে। বলা যায়, অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল সংসদের ভিপি মো. জায়েদুল হক বলেন, আমাদের প্রিয় সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ভবনের বয়স প্রায় এক শতাব্দী। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় ভবনটি এখন চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। প্রতিনিয়ত ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে, বৃষ্টির সময় ছাদ বেয়ে রুমে পানি ঢুকছে। শিক্ষার্থীদের জীবন আজ মারাত্মক ঝুঁকিতে।

তিনি বলেন, আমরা বারবার ভবন সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু হল প্রশাসন কেবল ‘বুয়েটের রিপোর্টের’ অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করছে। বাস্তবে সংস্কারের কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই। এভাবে আর চলতে পারে না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তাৎক্ষণিক সংস্কার কার্যক্রম শুরুর জোর দাবি জানাচ্ছি। যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হয়, তবে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। আমি তখন হলে উপস্থিত ছিলাম এবং সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। আমরা বারবারই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি যে শিক্ষার্থীদের জীবন এখন হুমকির মুখে। এ বিষয়ে আমরা জোর দাবি জানিয়ে আসছি। এর আগেও বলা হয়েছিল, যেসব স্থানে পলেস্তারা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে, সেগুলো দ্রুত জানাতে। জানালে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব।

প্রাধ্যক্ষ বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েছি, তারা এ বিষয়ে সহযোগিতা করছে। ইতোমধ্যে বুয়েটের একটি পরিদর্শন রিপোর্ট তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে এই কাজের জন্য অর্থ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, এই সপ্তাহের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বুয়েটের কাছে অর্থ ছাড় করা হবে। অর্থ ছাড় হলে বুয়েটের রিপোর্টটি পাওয়া যাবে, এবং এক সপ্তাহের মধ্যে সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ড. মামুন বলেন, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের পূর্ণ সংস্কারের জন্য ওপেক ফান্ড থেকে ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বুয়েটের রিপোর্টের ভিত্তিতে সংস্কার ব্যয়ের একটি আনুমানিক হিসাবও তৈরি করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ব্যাপারে সহযোগিতা করছে। তবে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছি, ওপেক ফান্ডের অর্থ ছাড়ের জন্য অপেক্ষা না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান ‘মেইনটেন্যান্স ও রিনোভেশন ফান্ড’ থেকে অন্তত দুই থেকে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে, যাতে আপাতত সংস্কারকাজ শুরু করা যায়। 

এসএআর/এমএসএ