ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক এবং ইনকিলাব মঞ্চ ঢাবি শাখার সদস্য সচিব ফাতিমা তাসমিন জুমা বলেছেন, দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিক স্যাবোটেজ ও অগ্নিকাণ্ড ঘটছে; একইসঙ্গে জুলাই আন্দোলনের আহত জুলাই যোদ্ধাদের নিয়ে সরকারের উদাসীনতা উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

তিনি দাবি করেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও কার্যকারিতা স্পষ্ট না হলে ওই সনদ কাগজেই সীমাবদ্ধ থাকবে।

রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মধুর ক্যান্টিনে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার অস্পষ্টতা, সনদের আইনি ভিত্তির অনুপস্থিতি ও দেশের সার্বিক নিরাপত্তাহীনতা বিষয়ে ইনকিলাব মঞ্চ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ডাকসুর মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক।

দেশে চলমান অগ্নিকাণ্ড প্রসঙ্গে ফাতিমা তাসমিন জুমা বলেন, দেশের গুরুত্বপূর্ণ কেপিআই স্থাপনাগুলোতে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোয় একটি কমন প্যাটার্ন দেখা যাচ্ছে– সব ঘটনাই অর্থনৈতিকভাবে সংবেদনশীল জায়গায় এবং সেসব স্থানে নিরাপত্তাহীনতা স্পষ্ট।

এসময় তিনি এয়ারপোর্টে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করেন এবং বলেন, কীভাবে এসব স্থানে স্যাবোটেজ ঘটছে, গোয়েন্দা সংস্থার নিষ্ক্রিয়তা উদ্বেগের।

পুলিশি আচরণের নিন্দা করে ডাকসুর এ নেত্রী বলেন, জুলাইয়ে যারা একদম সামনে থেকে আহত হয়েছেন, পঙ্গু হয়েছেন, চোখ হারিয়েছেন, তাদের ওপর পুলিশের যে এখনো কি পরিমাণ ক্ষোভ রয়েছে আবার আমরা দেখতে পেলাম। পুলিশ সংস্কারের কথা কতবার বলে, পুলিশ নাকি সংস্কার করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ৭০০ জনকে অজ্ঞাত পরিচয়ের আসামি করে করা চারটি মামলার কথা উল্লেখ করে ফাতিমা তাসমিন জুমা বলেন, এ ধরনের মামলায় যারা আহত রয়েছেন তাদের সম্ভাব্য হয়রানি থেকে নিস্তার হওয়ার নিশ্চয়তা থাকা দরকার।

তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে যে তারা জুলাই যোদ্ধাদের ওপর কোনো ধরনের হয়রানিমূলক মামলা চালাবে না এবং তাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

ডাকসুর এ নেত্রী বলেন, আতিকুল কাজী জুলাইতে একবার হাত হারিয়েছে। আবার আমরা দেখতে পেলাম যে তার ওপর পুলিশ হামলা করছে। তাকে কি পুলিশ চেনে না? তারা কি জানে না? এরা কারা? তারপরও তাদের ওপর যে এ ধরনের হামলা করেছে, এটা সুস্পষ্টভাবে তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।

ইনকিলাব মঞ্চের আব্দুল্লাহ আল জাবির বলেন, ৩৩টি রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে তৈরি খসড়ায় বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া অস্পষ্ট। তিনি প্রশ্ন তোলেন, নোট অব ডিসেন্ট রয়ে গেলে কীভাবে এটা সত্যিকারের জাতীয় সনদ হিসেবে গণ্য হবে। গণভোট বা সংসদীয় হস্তান্তরের সময় এসব বিষয়ের স্পষ্টতা জরুরি।

ইনকিলাব মঞ্চের এ নেতা বলেন, জুলাই সনদে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা যেমন পিলখানা হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করা হয়নি, এতে সনদের সার্বজনীনতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

আব্দুল্লাহ আল জাবির দাবি করেন, সরকারকে জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা ও হয়রানি রোধের আশ্বাস দিতে হবে এবং সনদের আইনগত ভিত্তি ও বাস্তবায়ন পরিকল্পনা দ্রুত স্পষ্ট করতে হবে।

এসএআর/এসএসএইচ