জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের বিধিমালা প্রজ্ঞাপন আকারে পাস হওয়ার পর নতুন আরও ১০ টি পদ সংযোজনের দাবি জানিয়েছে শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। 

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহিদ রফিক ভবনের নিচে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব দাবি জানান শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল।

হিমেল বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছিল প্রশাসন একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও বাস্তবসম্মত জকসু নীতিমালা প্রণয়ন করবেন, কিন্তু আমরা দেখেছি– প্রশাসন একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে, যা হতাশাজনক।’

তিনি আরও বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর প্রথমবার জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক হবে আশাবাদী। প্রশাসন সব ছাত্র সংগঠনকে সমান সুযোগ দেবে, যাতে প্রত্যেকে গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে। জকসু কোনো দলীয় প্রভাব বা পক্ষপাতদুষ্টতার শিকার না হয়ে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত প্রতিনিধি নির্বাচনের মুক্ত মঞ্চ হোক। জকসু শুধু রাজনৈতিক নয়, শিক্ষার্থীদের বাস্তব জীবনের সমস্যা সমাধানের প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠুক। এছাড়া জকসুর নেতৃত্ব এই সমস্যাগুলোর স্থায়ী সমাধানে শিক্ষার্থীদের কণ্ঠস্বর হয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করবে।

বিধিমালা পর্যালোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, সংবিধির বেশ কিছু ধারা শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষায় ইতিবাচক হলেও কিছু জায়গায় আরও সুস্পষ্ট ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি। জকসুর মেয়াদ ও দায়িত্বের ক্ষেত্র নির্দিষ্ট ও বাস্তবসম্মত করা। সদস্যপদে অংশগ্রহণের যোগ্যতা আরও সহজ করা। সংবিধিতে শিক্ষার্থীদের কল্যাণমূলক কার্যক্রমের ওপর জোর দেওয়া। উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করার ক্ষমতা শুধু সহ-সভাপতিকে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, এর সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সাধারণ সম্পাদককে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজনীয়।

সংবাদ সম্মেলনে শাখা ছাত্রদলের প্রস্তাবিত নতুন পদগুলো হলো– বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থী বিষয়ক সম্পাদক; ছাত্রীকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক (শুধু নারীদের জন্যে বরাদ্দ থাকবে); দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক (ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক সম্পাদক); ধর্ম ও সম্প্রীতি বিষয়ক সম্পাদক; মিডিয়া ও যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক; দপ্তর সম্পাদক; বিতর্ক সম্পাদক এবং আলাদাভাবে দুটি সম্পাদক করতে হবে; স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক থেকে (ক) স্বাস্থ্য সম্পাদক, (খ) পরিবেশ সম্পাদক আলাদাভাবে করতে হবে; সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক থেকে করে দুটি সম্পাদক (ক) সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক, (খ) সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পাদক; কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক।

এর আগে ছাত্রদলের প্রস্তাবিত দাবির মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র সম্পাদক, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক সহ একটি সদস্য পদ জকসু বিধিমালায় সংযোজন করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, আমাদের যেসব নেতাকর্মী আছেন, সবাই যোগ্য। তবে এখনও প্যানেলে কারা থাকবেন এ নিয়ে আলোচনা হয়নি। জকসু নির্বাচনে অধিকরতর গ্রহণযোগ্য প্রার্থীদের নিয়েই প্যানেল প্রকাশ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা এমফিল ও পিএইচডির শিক্ষার্থীদের রাখার দাবি জানিয়েছিলাম। সেটা রাখা হয়নি। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাবল এমফিল সুযোগ পেলেও জকসুতে সে সুযোগ নেই। এছাড়া বিগত ফ্যাসিস্টদের বিচার করা হয়নি। এটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যর্থতা।

এ সময় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক সুমন সরদার, জাফর আহম্মেদ, মোস্তাফিজুর রহমান রুমি সহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এমএল/বিআরইউ