রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্লাজমা প্রযুক্তি ব্যবহার করে খাদ্যের মান উন্নয়ন এবং এতে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট বা ক্ষুদ্র পুষ্টি উপাদান বৃদ্ধিতে যুগান্তকারী সাফল্য অর্জন করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের গবেষণা দল ‘প্লাজমা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণাগার’-এ পরিচালিত গবেষণায় এই সাফল্য অর্জন করে। গবেষণায় এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফসলের মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধিতে সুফল পেয়েছেন।

গবেষণার নেতৃত্ব দেন জীববিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পিএইচডি গবেষক মামুনুর রশিদ, এবং তত্ত্বাবধান করেন ল্যাব পরিচালক অধ্যাপক মামুনুর রশিদ তালুকদার। 

গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, প্লাজমা প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে ধানের জিঙ্কের পরিমাণ ৫৯ শতাংশ, আলুতে ২০৪ শতাংশ এবং বেগুনে ৮৮ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে। একইভাবে গম, ভুট্টা ও পালংশাকেও ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে।

অধ্যাপক মামুনুর রশিদ তালুকদার জানান, গবেষণার ফলাফল আন্তর্জাতিক তিনটি স্বনামধন্য জার্নাল- জার্নাল অব প্ল্যান্ট গ্রোথ রেগুলেশন (স্প্রিংগার), হেলিয়ন (এলসেভিয়ার) এবং প্লাজমা মেডিসিন-এ প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষকদের মতে, প্লাজমা প্রযুক্তি শুধু খাদ্যের পুষ্টি উপাদান বৃদ্ধি করে না, বরং উৎপাদনের সময় ১৫–২০ দিন পর্যন্ত কমায়, ফসলের ফলন বাড়ায় এবং কীটনাশক প্রতিরোধেও কার্যকর ভূমিকা রাখে।

মামুনুর রশিদ জানান, তারা গবেষণায় বিভিন্ন ধরনের প্লাজমা উৎস- গ্লাইডিং আর্ক ডিসচার্জ, ডাইইলেকট্রিক ব্যারিয়ার ডিসচার্জ এবং গ্লো ডিসচার্জ প্লাজমা- ব্যবহার করেছেন। বীজ প্রক্রিয়াকরণ ও প্লাজমা-সক্রিয় পানি প্রয়োগের মাধ্যমে ফসলের অঙ্কুরোদ্‌গম হার ও ফলন উভয়ই বেড়েছে।

তিনি বলেন, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট সংবৃদ্ধকরণে প্লাজমার ব্যবহার আমাদের গবেষণায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। কৃষক পর্যায়ে এই প্রযুক্তি সম্প্রসারণের জন্য পর্যাপ্ত বাজেট না থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি এবং সরকারের সহযোগিতা পেলে এটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

এএইচআর/এমএসএ