জবিতে ‘রান উইথ শিবির’ কর্মসূচি
‘চলো একসাথে হাঁটি, একসাথে দেশ গড়ি’ —স্লোগানকে ধারণ করে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘রান উইথ শিবির’ কর্মসূচির পালন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে কর্মসূচিটি শুরু হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক হয়ে কোর্ট এলাকা, রায় সাহেববাজার মোড়, ধোলাইখাল হয়ে ধূপখোলা মাঠে গিয়ে এটি শেষ হয়। শাখা সূত্রে জানা যায়, এ কর্মসূচিতে তিন হাজার শিক্ষার্থী অংশ নিতে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে।
বিজ্ঞাপন
কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সিফাত সাকিব বলেন, অসাধারণ! অংশ না নিলে আফসোস করা লাগত। এমন প্রোগ্রাম আরও চাই! আমাদের জগন্নাথে বিনোদনের আলাদা ব্যবস্থা নাই। আপনারা এমন উদ্যোগ নিলে আমরা এনজয় করতে পারি।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক সম্পাদক মোহতাসিম বিল্লাহ শাহিদী বলেন, শিক্ষার্থীদের জ্ঞানচর্চার জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা। কিন্তু আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে তাকালে দেখি, এখানে শরীরচর্চার জন্য পর্যাপ্ত কোনো ব্যবস্থা নেই। আজকে জবি শিবিরের ‘রান উইথ শিবির’ কর্মসূচিতে যেভাবে শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে, তাতে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি স্বাস্থ্যসচেতন। কিন্তু এখানে শরীরচর্চার কোনো অবকাঠামো এখনো গড়ে তোলা হয়নি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি দাবি জানাই, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসচেতনতার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে শরীরচর্চার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয়।
বিজ্ঞাপন
এসময় ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভিপি আবু সাদিক কায়েম বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের উদ্যোগে আয়োজিত ‘রান উইথ শিবির’ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ দেখে আমার কাছে উৎসবমুখর পরিবেশ মনে হয়েছে। আমাদের এ আয়োজনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীরা যেন শারীরিকভাবে সুস্থ থাকে। আগামীর বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিতে হলে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার বিকল্প নেই। বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে ছাত্রশিবির এ ধরনের কর্মসূচি বৃহৎ আকারে আয়োজন করতে পারেনি। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পরিবর্তন-পরবর্তী সময়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির শিক্ষার্থীদের জন্য একের পর এক চমৎকার আয়োজন করে চলেছে। আশা করি, এই আয়োজন ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে।
এসময় শিবিরের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিগবাতুল্লাহ সিগবা বলেন, এমন একটি আয়োজনের জন্য জবি শিবিরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সংকটের মধ্যে রয়েছে এবং এই সংকটে বাংলাদেশের তরুণরাই সবসময় এগিয়ে এসেছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি একটি ফ্যাসিবাদী শক্তি আবারও বাংলাদেশকে হুমকির মধ্যে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা মনে করি, আমাদের তরুণ সমাজ যদি সজাগ থাকে, ফিট থাকে তবে এই ফ্যাসিবাদী শক্তির মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার সুযোগ নেই। একইসঙ্গে যারা আধিপত্যবাদী শক্তি আছে, যারা বাংলাদেশে বিদেশি প্রভাব কায়েম করতে চায়— বাংলাদেশের তরুণ সমাজের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি জানাতে চাই।
এসময় জবি শাখা শিবিরের সভাপতি রিয়াজুর ইসলাম বলেন, আজকের ‘রান উইথ জবি শিবির’ কর্মসূচির মূল প্রতিপাদ্য ‘চলো একসঙ্গে হাঁটি, একসঙ্গে দেশ গড়ি’। আমাদের এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকা। আগামীর বাংলাদেশ নির্মাণ করতে হলে সুস্থ থাকার বিকল্প নেই। আমাদের এ কর্মসূচিতে তিন হাজারের মত শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রেশন করে প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছে। শিক্ষার্থীদের নিয়ে এ আয়োজন করতে পেরে আমরা আনন্দিত। আশা করি জবি শিবির আগামীতেও শিক্ষার্থীদের জন্য আরও কার্যকর ও চমৎকার কর্মসূচির আয়োজন করবে ইনশাআল্লাহ। সে সব কর্মসূচিতে সকল শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের আহ্বান জানাই।
এসময় শাখা শিবিরের সাবেক সভাপতি মাকসুদুর রহমান, আসাদুল ইসলাম, শাখা সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল আলিম আরিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ জাহেদ, অফিস সম্পাদক ইব্রাহিম খলিলসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
এমএল/এসএম