তাহসিনুল করিম চৌধুরী

মাকে হারানোর পর থেকে বাবাই সব। মায়ের অভাববোধ কখনো বুঝতে দেননি। আগলে রেখেছেন নিজের সবটুকু সামর্থ্য দিয়ে। স্বপ্ন দেখতেন বড় হয়ে ছেলে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হবে। দেশের কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে। অবশেষে সেই স্বপ্ন ধরা দিয়েছে। তাইতো খুশিতে আত্মহারা বাবা রেজাউল করিম চৌধুরী।

বলছিলাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ‘সি’ ইউনিটে প্রথম হওয়া তাহসিনুল করিম চৌধুরীর কথা। ছেলে শুধু তার স্বপ্ন পূরণই করেননি হয়েছেন ইউনিটের সেরা। ছেলের এমন অর্জনে খুশির কমতি নেই বাবার।

জানা যায়, তাহসিনুল করিম চৌধুরীর বাড়ি চট্টগ্রামের নন্দনকাননে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ১০৮.২৫ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছেন তাহসিনুল। পড়েছেন চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট কলেজে। তাদের বাবা রেজাউল করিম পেশায় ব্যাবসায়ী। মা কুলসুম চৌধুরী মারা যান ২০১২ সালে। তাহসিনুল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে পেয়েছেন জিপিএ ৫।

তাহসিনুল করিম চৌধুরী বলেন, সর্বপ্রথম আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। পাশাপাশি আমার বাবার প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। তিনি সাহস যুগিয়ে পাশে না থাকলে হয়তো এতটুকু সম্ভব হতো না। নিজের প্রতি যেমন বিশ্বাস ছিলো তেমনি লক্ষ্য ছিল অটুট।
একাগ্রতা ও পরিশ্রম আমার এই ফলাফল এনে দিয়েছে। 

তিনি বলেন, আমার খুশি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। বাবা স্বপ্ন দেখতেন ভালো কোথাও পড়াশোনা করব। বাবার সেই ইচ্ছেপূরণ করতে পেরেছি তাতেই আমার তৃপ্তি। চবির ফিন্যান্স বিভাগে পড়ার ইচ্ছে আছে।

তাহসিনুলের বাবা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমার আনন্দের দিন। অনেক চিন্তায় ছিলাম ফলাফল কী হবে? আজ খুশির খবর পেয়েছি। ছেলের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই। সে যেন দেশের জন্য অবদান রাখতে পারে।

চবির ‘সি’ ইউনিটের কো-অর্ডিনেটর ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক সালামতউল্ল্যা ভূঁইয়া বলেন, তাহসীনুল ‘সি’ ইউনিটে প্রথম হয়েছে। নিঃসন্দেহে সে কঠোর পরিশ্রম করেছে এবং তার ফলাফল সে পেয়েছে। আমাদের চাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে সে ভালো করে পড়াশোনা করে আলোকিত মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হোক।

এমএসআর