বরগুনায় ইউএনওর বিরুদ্ধে মামলা
বরগুনায় আদালত অবমাননার দায়ে তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাওছার হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আদালতের আদেশ অমান্য করে অন্যের নামে রেকর্ডকৃত জমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া তালতলীর সহকারী কমিশনার ভূমি, উপজেলা ভূমি অফিসের কানুনগো, সার্ভেয়ার ও বড়বগী ইউনিয়নের তহসিলদারের বিরুদ্ধেও আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছে।
সোমবার (৭ মার্চ) বিকেলে বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আতিকুল হক।
বিজ্ঞাপন
জানা যায়, তালতলীতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদটি শূন্য থাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাওছার হোসেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তালতলী উপজেলার বড়বগী মৌজার ৩৯৯৩ ও ৪০০০ দাগের ৪ একর কৃষি জমি ১৯৬৪-৬৫ সালে মৌলবী লতিফ ও সিদ্দিকুর রহমান নামে দুজন ব্যক্তিকে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত দেয় সরকার।
পরে ১৯৮১ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ও রেকর্ডকৃত জমি থেকে বদলুর আলম বাবুলসহ কয়েকজনের কাছে ২ একর ৬৭ শতাংশ বিক্রি করেন তারা। কেনা সেই জমি গত ৪০ বছর ধরে ভোগ করে আসছেন উপজেলার আঙ্গুলকাটা গ্রামের সফিজউদ্দিন আহম্মেদের ছেলে বদরুল আলম। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাওসার হোসেন ওই জমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের জন্য নির্ধারণ করেন। কোনো প্রকার নোটিশ ও উচ্ছেদের কাগজপত্র ছাড়াই প্রথমে রেকর্ডকৃত সম্পত্তি দিয়ে জোরপূর্বক রাস্তা নির্মাণ করা হয়।
পরে গত ২৫ জানুয়ারি আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাওসার হোসেনসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন বদলুর আলম। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ওই ৫ জনকে লিখিতভাবে জবাব দিতে বলেন। আদালতের লিখিত নোটিশ অন্য তিনজন গ্রহণ করলেও উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাওসার হোসেন গ্রহণ করেননি। আদালত ওই জমিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করে এবং মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জমিতে কোনো প্রকার কাজ না করার নির্দেশ দেন। কিন্তু আদালতের আদেশ অমান্য করে ওই জমিতেই আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ শুরু করেন ইউএনও কাওসার হোসেন।
বিজ্ঞাপন
গত ৪ মার্চ আমতলী সহকারী জজ আদালতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাওছার হোসেন, সহকারী কমিশনার ভূমি, উপজেলা ভূমি অফিসের কানুনগো, সার্ভেয়ার ও তহসিলদারে বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ করে মামলা করা হয়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চায়।
এ বিষয়ে মামলার বাদী বদলুর আলম বলেন, আমাদের বন্দোবস্তের জমিতে ইউএনও কোনো প্রকার নোটিশ ছাড়াই দখল নিয়েছেন। পরে আশ্রয়ণের ঘর নির্মাণ শুরু করেন। বিষয়টি নিয়ে আমি আদালতে মামলা করি। আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিলেও তিনি সে আদেশ মানেননি। এ জন্য তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেছি।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আতিকুল হক বলেন, ইউএনও কাওসার হোসেনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে নোটিশ করেছেন।
এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাওছার হোসেন বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তাই আমি কিছু বলতেও পারব না।
আরআই