পাবনার সুজানগর পৌরসভার কর্মচারী ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আল-আমিন হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার সব আসামিকে নিজেদের কর্মী-সমর্থক দাবি করে মামলা প্রত্যাহার চেয়েছেন পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব। 

সোমবার (২১ মার্চ) দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান। এ সময় নিজ বলয়ের নেতাকর্মীদের নামে মামলা হওয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহিনকে দোষারোপ করেন তিনি।

লিখিত বক্তব্যে আব্দুল ওহাব বলেন, গত ১৩ মার্চ পারিবারিক শত্রুতা ও জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আল-আমিনকে হত্যা করা হয়। কিন্তু প্রকৃত আসামিদের আড়াল করে সম্পূর্ণ রাজনৈতিকভাবে আমার নেতাকর্মীদের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। অথচ তাদের মধ্যে অনেকেই সেদিন সুজানগর বা পাবনাতে উপস্থিতই ছিলেন না। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহীন নিহত আল-আমিনের ভাই লাল্টু প্রামাণিককে দিয়ে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার নেতাকর্মীদের নামে মামলা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, শাহীন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকেই দলবিরোধী কর্মকাণ্ডে আরও বেপরোয়া হয়েছেন। গত পৌরসভা নির্বাচন ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিলেন।

নেতাকর্মীদের নামে মামলা দায়ের ও দলবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য শাহিনকে বহিষ্কারসহ দলকে রাহুমুক্ত করে সুজানগরে সুস্থ ধারার রাজনীতি করার সুযোগ দিয়ে দলের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন আব্দুল ওহাব। 

তিনি বলেন, মামলার ৩৩ আসামির মধ্যে ২৫ জনই আমার কর্মী-সমর্থক। আর বাকিরা সুজানগর পৌরসভার সাবেক মেয়র তোফাজ্জল হোসেন তোফার কর্মী-সমর্থক। যাদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন।

আব্দুল ওহাব জানান, এ বিষয়টি তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমানসহ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বপ্রাপ্তদের অবহিত করেছেন। এছাড়াও পাবনা-২ (সুজানগর-বেড়ার একাংশ) আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির এবং পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্সের কাছে গিয়েও কোনো সহযোগিতা পাননি বলে তিনি অভিযোগ করেন। 

সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও দুলাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম শাহজাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাগরকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিন চৌধুরী, ভায়না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিন, আহমেদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন বিশ্বাস, রানীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তৌফিকুল আলম পিযূস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগের বিষয়ে সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহিন বলেন, আব্দুল ওহাব উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে থেকে খুনিদের পক্ষ নেওয়ায় আমরা লজ্জিত। তার এই সংবাদ সম্মেলনই প্রমাণ করে তিনিও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। আল-আমিন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এবং আওয়ামী পরিবারের সন্তান। তাই তাকে হত্যার ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। 

রাকিব হাসনাত/আরএআর