তিন দিন ধরে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের জেরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে লালমনিরহাটে। এ ঘটনায় বাস টার্মিনাল এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে জেলা পুলিশ।

বুধবার (২৩ মার্চ) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সদর থানার ওসি শাহ আলম। তিনি জানান, যাত্রীদের নিরাপত্তা ও শ্রমিকদের শৃঙ্খলা ফিরে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এর আগে রোববার (২০ মার্চ) দুপুরে থেকে থেমে থেমে শহরের পুরাতন বাস স্ট্যান্ড এলাকায় সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে। এ ঘটনার পর থেকে প্রতিদিন যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিনের পুরাতন কমিটি দিয়ে চলছে লালমনিরহাট বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন। পুরাতন কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক শ্রমিকদের কার্যালয়ের জন্য কেনা জমি গোপনে বিক্রি করে দিয়েছেন। এমন গুজব ছড়িয়ে গেলে সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয় এবং দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন শ্রমিকরা।

জানা যায়, শ্রমিকদের একটি পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন ও কোষাদক্ষ আনায়ারুল হক দুলু। অপর পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন বর্তমান কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম ও সম্পাদক বুলবুল আহমেদ।

এদিকে জমি বিক্রির দলিল দিয়ে গত ৬ মার্চ সাধারণ শ্রমিকরা সদর থানায় সভাপতি ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন তারা। এ ছাড়া পুরোনো ও মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্তের দাবিতে রোববার (২০ মার্চ) দুপুরে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন সাধারণ শ্রমিকরা। এ সময় বর্তমান কমিটি বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে তিনজন আহত হন। ওই দিন রাত ৮টার দিকে বর্তমান কমিটির কয়েকজন শ্রমিক শহরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলে থাকা শ্রমিকরা পুলিশ লাইনসের সামনে বিনিময় ফিলিংস স্টেশনের অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। এরপর থেকে প্রতিদিনই ঘটছে সংঘর্ষ।

এদিকে মঙ্গলবার (২২ মার্চ) বিকেলে বাস টার্মিনালে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক বুলবুল আহমেদের ওপর হামলা করে সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন ও কোষাদক্ষ আনোয়ারুল হক দুলুর অনুসারীরা। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বুলবুলের সমর্থকরা মিছিল বের করে বুড়িমারী এক্সপ্রেস, নাভিলা পরিবহন, হাজী পরিবহন ও সাদ্দাম পরিবহনের কাউন্টারে ভাঙচুর করেন। এ ঘটনার জেরে পুনরায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষের লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম জানান, গতরাতে দুই গ্রুপের মধ্যে কথাকাটির এক পর্যায়ে মারামারি শুরু হয়। প্রতিদিনই ঘটছে নানান ধরনের ঘটনা। যাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষরাও ভোগান্তিতে পড়েছেন। যাত্রীদের সুরক্ষার দিতে রাত থেকেই শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

নিয়াজ আহমেদ সিপন/এনএ