প্রেমিকার সঙ্গে ঘোরার খরচ যোগাতে অপহরণ নাটক সাজান তামিম
প্রেমিকার সঙ্গে ঘোরাফেরার খরচ যোগাতে নিজেকে অপহরণ করার নাটক সাজিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন এক তরুণ। বুধবার (০৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জ শহরে ঘোরাঘুরি করার সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তামিম মিয়া (২১) নামের ওই তরুণ।
ওই তরুণ কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার গোবরিয়া-আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর ভাটিপাড়া গ্রামের মৃত মো. মাইন উদ্দিনের ছেলে।
বিজ্ঞাপন
তামিমের মা আফিয়া খাতুন জানায়, তামিমের বাবা বেঁচে নেই। সংসার চালান তিনি। তামিমরা এক ভাই ও এক বোন। বোনটি প্রতিবন্ধী। তামিম পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। বর্তমানে বেকার। সে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অজুহাতে মায়ের কাছ থেকে টাকা নিত।
শনিবার মাকে জানায়, রমজান মাসে সে ঢাকায় জুতার কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করবে। ঈদের সময় টাকা আয় করে বাড়ি ফিরবে। এজন্য তার নগদ ২৫ হাজার টাকা প্রয়োজন। ছেলের এমন কাজে যাওয়ার আগ্রহ দেখে মা খুশি হয়ে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ২০ হাজার টাকা তামিমের হাতে তুলে দেয়।
বিজ্ঞাপন
পাঁচ দিন আগে তামিম ঢাকায় জুতার কারখানায় কাজ করবে বলে ২০ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর রাতে তার একটি নম্বর থেকে ফোন আসে। বলা হয় তামিমকে অপহরণ করা হয়েছে। ফোনের ওই পাশ থেকে একটি মেয়ে কণ্ঠ জানায়, যদি ছেলেকে জীবিত চান, তবে এক লাখ টাকা নিয়ে দ্রুত চলে আসেন। টাকা না দিলে তামিমকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় ছেলেকে বাঁচাতে মা প্রতিবেশীদের কাছে টাকা চাইতে গিয়ে ব্যর্থ হন। শেষে প্রতিবেশীদের পরামর্শে মা কুলিয়ারচর থানায় গিয়ে পুলিশের সহযোগিতা চান। পুলিশ বুধবার কিশোরগঞ্জ শহর থেকে তামিমকে উদ্ধার করেন।এরপর মা জানতে পারেন, প্রেমিকাকে সঙ্গে নিয়ে ঘোরার জন্য তামিম অপহরণ নাটক সাজিয়েছিল।
তামিমের মা আফিয়া খাতুন বলেন, আমার মেয়েটি প্রতিবন্ধী। মেয়ের প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা সংসারে খরচ করি। বিভিন্ন সময় ছেলের চাহিদা মেটাতে গিয়ে অনেক কিছু বিক্রি করতে হয়েছে। এখন আমার তিন বেলার খাবার যোগাড় করতে খুব কষ্ট হয়।
কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, অপহরণটি মূলত নাটক ছিল। প্রেমিকার সঙ্গে ঘোরাফেরার খরচ যোগাতে সে এই অপহরণ নাটক করেছিল। মায়ের অভিযোগ পাওয়ার পর তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় তামিমের অবস্থান চিহ্নিত করা হয়। কিশোরগঞ্জ শহর থেকে তাকে আটক করা হয়। এ সময় সে প্রকৃত ঘটনা খুলে বলে। পরে কাউন্সেলিং করে তাকে মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এসকে রাসেল/এসপি