জমে উঠেছে বাবুরহাট, এবার ২ হাজার কোটি টাকার বেচাকেনার আশা
ঈদকে সামনে রেখে ক্রেতার পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে দেশের অন্যতম পাইকারি কাপড়ের বাজার নরসিংদীর শেখেরচর-বাবুরহাট। করোনার ধাক্কা কাটিয়ে প্রায় দুই বছর পর বাজার জমজমাট হওয়ায় দুই হাজার কোটি টাকা বেচাকেনার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গামছা, শাড়ি, লুঙ্গি, থ্রি-পিস, শার্ট পিস, প্যান্ট পিস, পাঞ্জাবির কাপড়, থান কাপড়সহ দেশীয় তৈরি প্রায় সব ধরনের কাপড় মেলে এই হাটে। ছোটবড় প্রায় পাঁচ হাজার দোকানে সপ্তাহের বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত টানা তিন দিন চলে বেচাকেনা।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, সূর্য উঠার পর পরই পাইকাররা আসতে শুরু করেছেন বাজারে। বাজারের পাশে ভিড়তে থাকে দূর-দূরান্ত থেকে আসা লরি ও পিকআপ ভ্যান। বেলা একটু বাড়তেই ক্রেতা-বিক্রেতার দর কষাকষিতে মুখর হতে শুরু করে বাজার।
বিজ্ঞাপন
রাজশাহী, বগুড়া, কুড়িগ্রাম, সিলেট, ফেনী, বরিশাল, পিরোজপুর, জামালপুর, ভোলা, সিরাজগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারি ক্রেতারা এসেছেন বাজারে। দিনব্যাপী কেনাকাটা করে ট্রাকবোঝাই করে ফিরে যাচ্ছেন নিজ জেলায়। অনেকে আবার কাপড় কিনে কুরিয়ার সার্ভিসে বুকিং দিচ্ছেন।
ক্রেতাদের মতে, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়াসহ একইসঙ্গে সবধরনের দেশীয় কাপড়ের বিপুল সমাহার থাকায় এই বাজার থেকে কাপড় কিনতে আসছেন তারা। তবে এ বছর সব ধরনের কাপড়ের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। তবে বিক্রেতারা বলছেন, অব্যাহতভাবে সুতার দাম বাড়ার কারণে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। যার ফলে এ বছর কাপড়ের দাম বেশি।
ঢাকার কাপড় ব্যবসায়ী ইমাম হোসেন বলেন, একমাত্র এই হাটেই পাইকারী দামে দেশীয় সব ধরনের কাপড় একইসঙ্গে পাওয়া যায়। তাই দোকান সাজাতে এখানে কাপড় কিনতে আসা। তবে এ বছর কাপড়ের দাম তুলনামূলক বেশি।
মৌলভীবাজার থেকে আসা কাপড় ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম বলেন, এখান খেকে পাইকারী দামে কাপড় কিনে নিজ দোকানে খুচরা দামে বিক্রি করি।
পাইকারি কাপড় বিক্রেতা সত্যরঞ্জন দাস বলেন, এ বছর রোজার শুরু থেকেই সন্তোষজনক বেচাকেনা শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারি ক্রেতারা আসতে শুরু করেছেন। সুতার দাম বাড়ার কারণে সব ধরনের কাপড়ের দাম কিছুটা বেড়েছে।
মোখলেস হোসাইন নামে অপর বিক্রেতা বলেন, প্রতি বছরই ঈদে কাপড়ের গুণগত মানসহ নিত্যনতুন ডিজাইন করা হয়। খুচরা বাজারে পুরোদমে বেচাকেনা শুরু না হলেও বিক্রেতারা আগেই কাপড় কিনতে আসছেন। সামনে হয়ত বেচাকেনা আরও বাড়বে।
শেখেরচর-বাবুরহাট বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান ভুঁইয়া বলেন, ঈদের বেচাকেনাকে ঘিরে ৪৬টি সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় এ বছর লোকসান কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা করছি। সাধারণত প্রতি বছর ঈদকে ঘিরে দেড় থেকে দুই হাজার কোটি টাকার কাপড় বেচাকেনা হয়ে থাকে। এ বছর তা আরও বাড়বে বলে আশাবাদী।
এসপি