মাওলানা সেজে মেকআপম্যানের ওয়াজ, গণপিটুনি
এফডিসির মেকআপম্যান আবুল কালাম শিপন (লাল চিহ্নিত)
এফডিসির মেকআপম্যান আবুল কালাম শিপন। নিজেকে ‘হাফেজ মাওলানা আবুল কালাম আজাদ’ দাবি করে ওয়াজ করতে আসেন সাতক্ষীরা সদরের বালিথা আবুল ফারহা সিদ্দিকিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায়। ওয়াজও শুরু করেন তিনি।
তবে মাঝরাতে ঘটে বিপত্তি। সুধীজনদের সন্দেহ হলে স্টেজেই তার পরিচয় জানতে চান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান। তখনই ধরা পরে প্রতারণার বিষয়টি। আর স্টেজেই গণপিটুনির শিকার হন ওই মেকআপম্যান।
বিজ্ঞাপন
ফিংড়ি ইউনিয়নের বালিথা ঈদগাহের পশ্চিম পার্শ্বে আবুল ফারহা সিদ্দিকিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার পক্ষ থেকে ২৫তম বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
ওয়াজ মাহফিলের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে আলহাজ হাফেজ মাওলানা আবুল কালাম আজাদকে প্রধানবক্তা করা হয়। কিন্তু ওই নামে মঞ্চে আসেন এফডিসির মেকআপম্যান কালাম শিপন।
বিজ্ঞাপন
ওয়াজ মাহফিলের সভাপতিত্ব করছিলেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. শামসুর রহমান। মাহফিলে অতিথি ছিলেন চিত্রনায়ক মেহেদী হাসান ও আমির সিরাজী।
মাহফিলের সভাপতি ফিংড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুর রহমান বলেন, ‘স্থানীয় সালমা বেগম নামে এক নারী মাহফিলের আয়োজন করেছিলেন। মাহফিলে ঢাকা থেকে মাওলানা আবুল কালাম আজাদকে প্রধানবক্তা করা হয়। কিন্তু ওই নাম নিয়ে প্রতারণা করে এসেছেন অন্যজন। পরে তিনি স্টেজে ওয়াজ করতে শুরু করেন। মাঝরাতে আমার সন্দেহ হয়। কেননা আবুল কালাম আজাদের ওয়াজ আমি আগে শুনেছি।’
তিনি আরও বলেন, এরপর আমি মুখের কাপড় সরিয়ে দেখি তার মুখে দাড়ি নেই। পরে আসল পরিচয় জানতে চাইলে তিনি স্বীকার করেন আমি আবুল কালাম আজাদ নই। তারপর উত্তেজিত জনগণ তাকে মারপিট শুরু করে।
চিত্রজগতের আমির সিরাজী তখন উত্তেজিত জনতাকে বলেন, ‘আবুল কালাম শিপন চিত্রজগতের একজন ক্যামেরাম্যান, মেকআপম্যান, অভিনেতা, স্ক্রিপ্ট রাইটার ও হাফেজ। তিনি ১১টি গুণের অধিকারী। আমরা কোথাও ওয়াজ শুনতে গেলে বা মাহফিলে গেলে তাকে সঙ্গে নিয়ে যায়। তিনি ভালো ভালো কথা বলেন।’
সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মাহফিলে পরিচয় গোপন করে ওয়াজ করা এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার। এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। উত্তেজিত জনতা মারপিট করে তাকে ছেড়ে দিয়েছিল।
আকরামুল ইসলাম/এমএসআর