রংপুরে মাইক্রোবাস ও মাহিন্দ্রার (থ্রি-হুইলার) মুখোমুখি সংঘর্ষে পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনায় মাইক্রোবাস চালককে দায়ী করছেন পুলিশসহ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা। এ দুর্ঘটনায় মাহিন্দ্রাচালক ও এক দম্পতিসহ পাঁচজন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন অন্তত চারজন। তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ঈদের দ্বিতীয় দিন বুধবার (৪ মে) সন্ধ্যা সাতটার দিকে সদর উপজেলার পাগলাপীর সলেয়ালা বাজার এলাকায় রংপুর-সৈয়দপুর মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করার পাশাপাশি মাইক্রোবাস ও থ্রি-হুইলার মাহিন্দ্রাটি জব্দ করেছে। তবে দুর্ঘটনার পর মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো-চ ২০-০০২৭) চালক ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যান।

প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, রংপুর থেকে একটি মাইক্রোবাস তারাগঞ্জের দিকে যাচ্ছিল। অপরদিক থেকে যাত্রীবাহী একটি থ্রি-হুইলার মাহিন্দ্রা রংপুরের দিকে যাচ্ছিল। মাইক্রোবাসের চালক তখন মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে মহাসড়কের সলেয়াশা বাজার এলাকায় ইউটার্ন নেওয়ার সময় এ দুর্ঘটনা হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মাহিন্দ্রাচালকসহ তিনজন মারা যান। পরে আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও দুজন মারা যান।

আমদাজ হোসাইন নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মাইক্রোবাসের চালকের দায়িত্বহীনতা এবং বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার সময় মাইক্রোবাস চালক মোবাইল ফোনে কথা বলা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। এ কারণে ইউটার্ন নেওয়ার সময় চালক গাড়ি নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পেরে মাহিন্দ্রাকে ধাক্কা দেন। এতে মাইক্রোবাসের সামনে অংশসহ মাহিন্দ্রাটিতে লাগার সঙ্গে সঙ্গে দুমড়ে মুচড়ে যায়।

এদিকে, প্রত্যক্ষদর্শীদের মতো পুলিশের পক্ষ থেকেও একই দাবি করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, সন্ধ্যা ৭টার দিকে সলেয়াশা বাজারের কাছে ইউটার্ন নিতে গিয়ে যাত্রীবাহী একটি থ্রি-হুইলার মাহিন্দ্রাকে চাপা দেয় মাইক্রোবাস। এতে ঘটনাস্থলেই মাহিন্দ্রাচালকসহ তিনজনের মৃত্যু হয়। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হলে পথিমধ্যে আরও দুজন মারা যান।

নিহতরা হলেন- তারাগঞ্জ উপজেলার হাড়িয়ারকুঠি খাড়ুয়াবাধা গ্রামের আমজাদ হোসেন (৫০), একই উপজেলার ইকরচালীর দোহাজারী ছুটহাজীপুর গ্রামের মাহিন্দ্রাচালক ছেয়াদুল ইসলাম (৩৭), আম্বিয়া বেগম (৬০), গঙ্গাচড়ার বেতগাড়ি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৪৫) ও তার স্ত্রী নাজমা বেগম (৩৫)।

রাতেই সদর কোতোয়ালী থানা, গঙ্গাচড়া মডেল থানা ও তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশের সহযোগিতায় লাশগুলো পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব মোর্শেদ।  

এদিকে গঙ্গাচড়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল হোসেন বলেন, মাইক্রোবাস চালক মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। তার অসতর্কতার কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। মাইক্রোবাসটি জব্দ করে হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে নেওয়া হয়েছে। মাইক্রোবাসটির চালক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক ও শনাক্ত করা এখনও সম্ভব হয়নি। তবে তাকে আটকের চেষ্টা চলছে।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আইএসএইচ