বাঁশ দিয়্যা ঘাটা বন্ধ করছে, অ্যালা মেলাদূর হাঁটা নাগবে
রংপুর সদর উপজেলার চন্দনপাট ইউনিয়নের লাহিড়ীরহাট সাহাবাজপুর এলাকায় একটি সরকারি রেকোর্ডিও রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে দখল করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শুক্রবার (২৭ মে) দুপুরে ওই ইউনিয়নের সাহাবাজপুরে গিয়ে দেখা যায়, উদ্ধার করা রাস্তাটি জাল (নেট) ও বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওই ইউনিয়নের সাহাবাজপুর মৌজার বদরগঞ্জ রোডস্থ কারুপণ্যের সামনে বদরগঞ্জ রোড অভিমুখে রাস্তার দক্ষিণ পার্শ্বে এছোল মিয়ার জমির কিনারা হতে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বক্রাকার একটি রাস্তা নেমে গেছে। যা সাবেক ও বর্তমান রেকর্ডেও দৃশ্যমান। রাস্তাটি এলাকাবাসীর পার্শ্ববর্তী জমি-জমা হইতে কৃষি কাজ ও কৃষি জাত শষ্যের আনা-নেওয়া ও জমিতে জৈব সার, বীজ আনা-নেওয়ার জন্য খুবই জরুরি।
বিজ্ঞাপন
বিষয়টি স্থানীয় এলাকাবাসী ও কৃষকরা সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে লিখিত আকারে জানিয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদের সার্ভেয়ার গিয়ে গত সপ্তাহের বুধবার রাস্তাটি উদ্ধার করেন এবং রাস্তার সীমানায় পিলার দিয়ে রাস্তাটি স্থানীয় কৃষক ও এলাকাবাসীর চলাচলের সুবিধার্থে খুলে দেন।
বিজ্ঞাপন
কিন্তু অভিযোগ উঠেছে রাস্তাটি বের করার ৫ দিন না যেতেই রাস্তার পাশ্ববর্তী জমির মালিক কাজল মিয়া রাস্তার মাঝখান দিয়ে বাঁশ পুঁতে চলাচল বন্ধ করে দেয়। এ ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসী ও কৃষকরা ফুঁসে উঠেছেন। যেকোনো সময় এ ঘটনাকে ঘিরে বড় ধরনের সংঘাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দা উজ্জ্বল সরকার জানান, গ্রামের সবাই ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। আমাদের অনেকেই চলাচলের সুবিধার্থে কিছু অংশ ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু কাজল মিয়া রাস্তার জমি প্রথমে ছেড়ে দিলেও কয়েকদিন না যেতেই আবার দখল করে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এখন আমরা কীভাবে চলাচল করব? বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদকে অবগত করেছি। গ্রাম পুলিশ ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রাস্তাটি পরিদর্শন করে বাঁশ পুতা রাখার ঘটনাটি সরেজেমিনে দেখে গেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান হয়নি।
একই এলাকার সুরুজ মিয়া বলেন, এতদিন তো ওই ঘাটা (রাস্তা) দিয়্যা হাঁটছি, অ্যালা মেলাদূর হাটি তারপর বাড়ি যাওয়া নাগবে। কয়দিন ধরি বাঁশ দিয়্যা ঘাটা কোনা বন্ধ করি থুইছে। হামরা গরিব মানুষ, কাকো তো কিছু কবার পামো না। ঘাটা কোনা খুলি দিলে গ্রামের সবারে সুবিধা হইবে। চেয়ারম্যান সাইব সোগে জানে, এ্যলা তারে বিচারের ওপর সোগ কিছু নির্ভর করোছে। হামরা চাই ঘাটা কোনা সবার কাজোত নাগুক।
এদিকে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করে জমির মালিক কাজল মিয়া বলেন, অনেকেই জমির অংশ ছেড়ে দেয়নি। আমার অনুপস্থিতে ইউনিয়ন পরিষদের সার্ভেয়ার এসে রাস্তা বের করেছে। আমার জমিটি অন্যের কাছে বন্দক দেওয়া আছে। রাস্তা বের করার সময় ওই জমির অনেক ফসল নষ্ট হয়েছে। এ কারণে বাঁশ ও জাল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে।
এদিকে চন্দনপাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, এলাকাবাসী ওই রাস্তাটি উদ্ধার করার জন্য আবেদন করলে ইউপি সচিব, সার্ভেয়ার ও গ্রাম পুলিশ গিয়ে রেকোর্ডিও রাস্তাটি উদ্ধার করে। কিন্তু আবার রাস্তাটিতে বাঁশ পুঁতে দখল করার অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত অভিযুক্ত ওই জমির মালিক ও স্থানীয়দের নিয়ে পরিষদে বসা হবে।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরআই