প্রশাসন আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে
আন্দোলনে নেমেছেন ববি শিক্ষার্থীরা
বরিশাল বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর মাঝরাতে হামলার ঘটনায় কার্যত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় তৃতীয় দফায় সড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সোয়া পাঁচটায় বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের কর্ণকাঠি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে অবরোধ করেন।
বর্তমানে শিক্ষার্থীরা কাঠ দিয়ে সড়কে আগুন ধরিয়ে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছেন। এতে করে দীর্ঘ ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। খয়রাবাদ সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে ও শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতুর উত্তর দিকে আটকে পড়েছে শ-খানেক গাড়ি। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষ বিকল্প পথে দপদপিয়া পুরাতন ফেরিঘাটে খেয়া পার হয়ে চলাচল করছেন।
বিজ্ঞাপন
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সুজয় শুভ জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তারা আশ্বাস দিয়েও দায়সারা মামলা দিয়েছে। আমাদের যারা আহত হয়েছে, তারা হামলাকারীদের নাম জানিয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা করেছে অজ্ঞাত নামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। তাই আমরা আন্দোলন চালিয়ে যেতে সড়কে নেমেছি। তিনি আরও বলেন, আমাদের দাবি হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাত দেড়টার দিকে রূপাতলী হাউজিংয়ের সি-ব্লকের হারুন ম্যানশন ভবনের মেসে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। সেখানে অবস্থানকারী ছাত্রদের মারধর করে মারাত্মক জখম করা হয়। হামলায় ১১ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে ছুরি দিয়ে কোপ দেন রূপাতলী বিআরটিসি কাউন্টারের বাসের সহকারী রফিক। পরে আরও এক ছাত্রীকে লাঞ্ছিত করেন রফিক ও কাউন্টারম্যান বাদল। এর প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিআরটিসি কাউন্টার ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধ করেন।
সড়ক অবরোধ তুলে দেওয়ার জন্য ঘটনাস্থলে আসেন রূপাতলী বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন, রফিকুল ইসলাম মানিক, মামুনসহ কয়েকজন ক্ষমতাসীন দলের নেতা।
এ সময় কাওছার হোসেন শিপনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয় শিক্ষার্থীদের। সড়ক অবরোধের মধ্য থেকে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে ২৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন মোল্লাকে লাঞ্ছিত করেন শিক্ষার্থীরা। সেই ঘটনার রেশ ধরে কাওছার হোসেন শিপন, রফিকুল ইসলাম মানিকের লোকেরা রাতে মেসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান।
জানতে চাইলে কাওছার হোসেন শিপন বলেন, এই হামলা বা ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
হামলার পর পরই রাত আড়াইটার দিকে সড়কে কাঠ পুড়িয়ে অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্যের আশ্বাসে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়ে বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল পাঁচটায় ১৪ ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু শিক্ষার্থীদের দাবি অনুসারে মামলা না করায় ফের আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এনএ