বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে পুরস্কার পাওয়া মেয়েটি বাল্যবিয়ের শিকার
প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়ে যখন ষষ্ঠ শ্রেণিতে উঠেছিল, তখন প্রশাসনের সহায়তায় বাল্যবিয়ে বন্ধ করেছিল মেয়েটি। এ জন্য সে একটি সাইকেলও পুরস্কার পেয়েছিল। সে বর্তমানে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অথচ নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া সেই মেয়েটিই এখন বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) পার্শ্ববর্তী জেলার গাজীপুরের চৌরাস্তা এলাকার রাশেদুল ইসলাম ওরফে রনি নামের একজনের সঙ্গে তার বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরের চৌরাস্তা এলাকার রাশেদুল ইসলাম ওরফে রনি নামের একজনের সঙ্গে বৃহস্পতিবার মেয়েটির বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে তৎকালীন মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত সাদমীন বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ‘কন্যা সাহসিকা’ নামের একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় সংগঠনটির মাধ্যমে মেয়েটি এক ছাত্রীর বাল্যবিবাহ ঠেকায়। পুরস্কার হিসেবে এ জন্য ইউএনও তাকে একটি বাইসাইকেল উপহার দেন।
বিজ্ঞাপন
মেয়েটির মা বলেন, তার মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে থাকাকালীন বাল্যবিবাহ ঠেকিয়ে একটি সাইকেল পুরস্কার পেয়েছিল। সেই মেয়েটিকে তার শ্বশুরবাড়িতে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, মেয়ের বিয়ে তো দিতেই হবে। এ জন্য কাজির মাধ্যমে বিয়ে দিয়েছি।
এ বিষয়ে কাজি (নিকাহ রেজিস্ট্রার) মোসলেম উদ্দিন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ (পুরোনো বহুরিয়া ইউনিয়ন) থেকে দেওয়া একটি জন্মসনদের ভিত্তিতে তিনি নিবন্ধন করেছেন। তিনি যে সনদটি দেখান (২০০২৯৩১৬৬২৩০৩০১১৮), তা অনলাইনে যাচাই করলে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. শাকিল আহমেদ বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে মেয়েটির বিয়ের দাওয়াত খেয়ে বাড়ি ফিরেছি। এ বিষয়ে আর কিছু জানা নেই।
মির্জাপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবদুল মালেক ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে কোনো কাজি যদি বাল্যবিয়ের নিবন্ধন করে থাকেন এবং জন্মসনদ যদি ভুয়া প্রমাণিত হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিজিৎ ষোষ/এনএ