প্রেমিক বিয়েতে রাজি না হওয়ায় গলা চেপে হত্যা
বিয়েতে রাজি না হওয়ায় হত্যার শিকার হয়েছেন রশিদুল মন্ডল (২৫) নামের এক যুবক। মঙ্গলবার (১৪ জুন) রাতে রাজশাহী নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার সায়েরগাছা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত রশিদুল মন্ডল নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার পয়লান এলাকার জহির মণ্ডলের ছেলে। পেশায় রাজমিস্ত্রি রশিদুল কাজের সূত্রে মাঝেমধ্যেই রাজশাহীতে আসতেন।
বিজ্ঞাপন
এ ঘটনায় বুধবার (১৫ জুন) রাতে দুই নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন- সায়েরগাছা এলাকার একরামুল ইসলাম ভাদুর মেয়ে মেরিনা খাতুন (২১) ও একই এলাকার ইশা হকের মেয়ে নেশা খাতুন (২২)।
বিবাহ বিচ্ছেদের পর বাবার বাড়িতে থাকতেন মেরিনা। একই এলাকার বুলবুল আহম্মেদের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতেন তিনি। নেশা খাতুন তার ঘনিষ্ট এবং প্রতিবেশী।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ বলছে, মেরিনা খাতুনের সঙ্গে রশিদুল মন্ডলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়েতে রাজি না হওয়ায় প্রেমিককে শ্বাসরোধে হত্যা করেন মেরিনা। পরে নেশা খাতুনকে নিয়ে মরদেহ গৃহকর্তার বাড়িরে স্টোররুমে লুকিয়ে রাখে তারা।
এ ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেন নিহতের বাবা জহির মন্ডল। ওই মামলায় বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) দুপুরের দিকে গ্রেফতার দুজনকে আদালতে তোলে পুলিশ।
নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাসুদ পারভেজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বাসায় মরদেহ গুমের গোপন তথ্য ছিল পুলিশের কাছে। বুধবার রাত পৌনে ১০টার দিকে গৃহকর্তা বুলবুল আহম্মেদের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়।
গৃহকর্মী মেরিনা খাতুন পুলিশের কাছে প্রেমিককে হত্যা এবং মরদেহ গুমের কথা স্বীকার করেন। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে একতলা বাসার ছাদের স্টোররুমে মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় গৃহকর্মী মেরিনা খাতুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার সহযোগী নেশা খাতুনকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ওসি বলেন, মেরিনা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে বলেছে, বছর খানেক আগে তার সঙ্গে রশিদুলের পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তারা প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। মাঝেমধ্যেই তার সঙ্গে দেখা করতে আসতেন রশিদুল।
মঙ্গলবার রাতেও রশিদুল তার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। কথা-বার্তার একপর্যায়ে প্রেমিককে বিয়ের কথা বলেন তিনি। কিন্তু পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পরে জানানোর কথা জানান রশিদুল। তাতে সম্মত হননি মেরিনা। প্রেমিককে বিয়ের জন্য চাপ দেন তিনি।
রাত ১১টার দিকে সেখান থেকে চলে যেতে চাইলে তিনি প্রেমিককে বাধা দেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে রশিদুলকে তিনি ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। পরে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
বাড়ির লোকজন ঘুম থেকে ওঠার আগেই সকাল ৭টার দিকে বন্ধু নেশা খাতুনকে ডেকে আনেন। দুজন মিলেই মরদেহ বাড়ির ছাদের স্টোররুমে নেন। এ ঘটনায় পরে আইনত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান ওসি।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এমএএস