সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে চাপ বাড়লেও নেই যানজট
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে প্রিয়জনদের কাছে ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবীরা। এতে সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে বুধবার রাত থেকেই গাড়ির চাপ বাড়তে শুরু করে। আজ সকালে মহাসড়কে যানবাহনের ব্যাপক চাপ থাকলেও এখন পর্যন্ত কোথাও যানজটের সৃষ্টি হয়নি। এ ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ পুরোনো নলকা সেতুর পাশেই নবনির্মিত নলকা সেতুর দুটি লেনই খুলে দেওয়ায় উত্তরের ২২ জেলার এবারের ঈদ যাত্রা বেশ স্বস্তির হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
শুক্রবার (৮ জুলাই) সকাল পৌনে ৮টার দিকে সিরাজগঞ্জের সব মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসাদ্দেক হোসেন, হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লুৎফর রহমান ও সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক পরিদর্শক (প্রশাসন) সালেকুজ্জামান খান সালেক।
বিজ্ঞাপন
প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে যে যেভাবে পারছেন ছুটছেন গন্তব্যের উদ্দেশে। গণপরিবহনের পাশাপাশি ট্রাক, পিকআপ ভ্যানসহ ব্যক্তিগত যানবাহনে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছেন ঘরমুখো মানুষ।
বিজ্ঞাপন
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসাদ্দেক হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, কাল রাত থেকে গাড়ির চাপ অনেকটা বেড়েছে তবে কোথাও যানজটের সৃষ্টি হয়নি। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম গোলচত্বর এলাকায় উত্তরবঙ্গমুখী লেনে যানবাহনের প্রচুর চাপ রয়েছে। যার ফলে মাঝে মাঝে একটু ধীরগতি হচ্ছে তবে এখনো কোনো যানজট সৃষ্টি হয়নি।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লুৎফর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও হাইওয়ে থানার অধীন মহাসড়কের কোথাও যানজট নেই। গত ঈদের মতো এবারের ঈদ যাত্রাও নির্বিঘ্ন করতে মঙ্গলবার (৫ জুলাই) থেকে মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ১১৫ জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ জন আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ন (এপিবিএন) সদস্য রয়েছে।
এর সঙ্গে হাইওয়ে পুলিশের আরও ৩৫ জন সদস্য মিলিয়ে হাইওয়ে থানার পক্ষ থেকে সর্বমোট ১৫০ জন পুলিশ সদস্য মহাসড়কে কাজ করছেন। এ ছাড়া মহাসড়কে মোবাইল টিম কাজ করার পাশাপাশি ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও পর্যালোচনা করা হবে। যাতে কোনো চালক এলোমেলো যান না চালাতে পারেন। দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হবে দুর্ঘটনা কবলিত যানবাহন।
তিনি আরও বলেন, নলকা নবনির্মিত সেতুর ঢাকাগামী লেনটিও খুলে দেওয়ায় গত ঈদুল ফিতরের মতো এবারো হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকাসহ হাইওয়ে থানার আওতাভুক্ত রাস্তাতে কোনো যানজট হবে না বলেই আমরা মনে করছি।
সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক পরিদর্শক (প্রশাসন) সালেকুজ্জামান খান সালেক ঢাকা পোস্টকে বলেন, মহাসড়কে গাড়ির চাপ বাড়তে থাকলেও কোথাও যানজট নেই। তবে গভীর রাতে মহাসড়কের ঝাঐল এলাকায় একটি প্রাইভেটকার দুর্ঘটনা কবলিত হওয়ায় ভোররাতের দিকে কিছুটা ধীরগতি তৈরি হয়েছিল।
তিনি বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা সুন্দর ও নিরাপদ করতে ইতোমধ্যেই জেলা ট্রাফিক বিভাগ ও জেলা পুলিশ মিলিয়ে সর্বমোট ৫৬৭ জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত আছে মোবাইল টিম। ঈদুল ফিতরের মতো এবারো যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ও ঈদে মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ট্রাফিক বিভাগ সচেষ্ট রয়েছে।
সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. জাহিদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন, নলকা সেতুর উভয় লেন খুলে দেওয়ায় এবারের ঈদ যাত্রা অন্যান্য বছরের চেয়ে স্বস্তির হবে। মহাসড়কের ছোট ছোট গর্ত এবং ভাঙ্গা জায়গাগুলো মেরামত করা হয়েছে। পাশাপাশি হাইওয়ে পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে সংস্কারের কোনো চাহিদা করা হলে সেটাও করে দেওয়া হচ্ছে। ঈদ পরবর্তী যাত্রা পর্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে সেগুলো করে দেওয়া হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
শুভ কুমার ঘোষ/আরআই