পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে রাজধানী ঢাকা ছাড়ছেন মানুষ। সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও মোটরসাইকেলে করে ঝুঁকি নিয়ে অনেক মানুষ বাড়ি ফিরছেন। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটেও ঘরমুখো মানুষের পাশাপাশি মোটরসাইকেল আরোহীদের উপচে পড়া ভীড় রয়েছে। পথে কোনো বাধা-বিপত্তি ছাড়াই তারা মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে এসেছেন।

শুক্রবার (৮ জুলাই) সকাল থেকেই দৌলতদিয়া ঘাটে ঘরমুখো মানুষের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। পাশাপাশি পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি ফেরিতেই মোটরসাইকেলের সংখ্যা ছিলো চোখে পড়ার মতো। পথে কোনো বাধা ছাড়াই তারা দৌলতদিয়া ঘাটে আসছেন।

সরেজমিনে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় দেখা যায়, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই কোনো বাধা-বিপত্তি ছাড়াই রাজধানীসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে মোটরসাইকেল আরোহীরা তাদের স্ত্রী-সন্তান নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ছুটছেন। তারা পাটুরিয়া থেকে ফেরি পার হয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে আসছেন। তবে সড়কে কিংবা ফেরি পার হতে তাদের কোনো বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে আজ শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে ৯ হাজার গাড়ি পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ রয়েছে মোটরসাইকেল। গতকালও প্রায় ২ হাজার ২০০ মোটরসাইকেল ফেরি পার হয়। 

যাত্রী ও যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন করতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ২০টি ফেরি চলাচল করছে। এ ছাড়া উভয় পারেই ৫টি করে ফেরি ঘাট চালু রয়েছে। তবে পদ্মায় স্রোত থাকায় নদী পার হতে সময় বেশি লাগছে।

নারায়ণগঞ্জ থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে মাগুরা যাচ্ছেন আসাদুজ্জামান। তিনি ঢাকার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। ঘাট এলাকায় তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, স্ত্রী ও শিশু সন্তান নিয়ে যাচ্ছি দেশের বাড়িতে ঈদ করতে। বাসের টিকিট না পেয়ে নিজের ব্যক্তিগত মোটরসাইকেলেই ঝুঁকি নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছি। পথে কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি। ঘাটেও তেমন কোনো যানজট নেই।

সাভার থেকে মোটরসাইকেলে কুমারখালি যাচ্ছিলেন আরিফুর রহমান। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি কলেজে শিক্ষকতা করেন। ঈদ করতে স্ত্রীকে নিয়ে যাচ্ছেন দেশের বাড়িতে। দৌলতদিয়ার ৬ নং ফেরিঘাট এলাকায় কথা হয় তার সঙ্গে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেন ঝুঁকি নিয়ে মোটরসাইকেল যাচ্ছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, মোটরসাইকেলে না গিয়ে কি করব বলেন? বাসের টিকিট পাইনি। তাছাড়া আমার কলেজ আগে ছুটি হলেও প্রাইভেট পড়ানো ছিল। তাই দেরিতে বাড়ি যেতে হচ্ছে। বাসের টিকিট না পেয়ে বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়েই মোটরসাইকেলে যাচ্ছি। তবে পথে কোনো বাধাঁর সম্মুখীন হতে হয়নি। 

বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ে ডিজিএম শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল থেকেই ঘাটে মোটরসাইকেল আরোহীদের উপচে পড়া ভিড়। ফেরিতে অনান্য যানবাহনের তুলনায় মোটরসাইকেলের সংখ্যাই বেশি। ফেরিতে মোটরসাইকেল পারাপারের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা নেই। মহাসড়কে এই নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে কেউ যদি ঘাটে এসে পৌঁছায়, তাহলে আমরা তাদের নদী পারাপারের ক্ষেত্রে তো বাধা দিতে পারি না।

মীর সামসুজ্জামান/আরআই