রংপুরে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত সকাল ৮টায় কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া রংপুর মহানগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডের ৭৫টি ঈদগাহ মাঠসহ জেলার ১২ শতাধিক ঈদগাহ ও মহল্লাভিত্তিক ছয় হাজার মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করবেন মুসল্লিরা।

ঈদের দিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় ঈদগাহ মাঠ, মসজিদ ও মাদরাসায় এসব ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের মডেল মসজিদ ছাড়াও বিকল্প জায়গায় নামাজ আদায়ের প্রস্তুতি রয়েছে।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনে প্রস্তুতি সভাও করেছে রংপুর জেলা প্রশাসন। এতে করোনার বিস্তার রোধে সরকারি বিধিনিষেধ মেনে ঈদ জামাতে নামাজ আদায়ে মুসল্লিদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

শনিবার (৯ জুলাই) দুপুরে রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠ পরিদর্শন করেন রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান, সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র মাহমুদুর রহমান টিটু। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) গোলাম রব্বানী, সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন মিঞা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদ হাসান মৃধা, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান সিদ্দিকী রনি প্রমুখ।

জেলা প্রশাসক আসিব আহসান জানান, সকাল ৮টায় কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ঈদ জামাতের ইমামতি করবেন নগরীর জলকর জামে মসজিদের ইমাম মুফতি কাওসার আহমেদ। এতে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেবেন।

এদিকে সকাল সাড়ে ৭টায় রংপুর পুলিশ লাইনস মসজিদে, কামারপাড়া ঈদগাহ, মুসলিমপাড়া ঈদগাহ, আশরাফিয়া জামে মসজিদে সকাল ৮টায় ঈদজামাত অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া জেলার সবচেয়ে বড় মসজিদ কারামতিয়া জামে মসজিদ, রংপুর কোর্ট মসজিদ, ধাপ লালকুটি বাইতুল নুর জামে মসজিদ, কারমাইকেল কলেজ জামে মসজিদ, রাধাবল্লভ তাকওয়া জামে মসজিদ, শাপলা চত্বর আশরাফিয়া জামে মসজিদ, নিউ আদর্শপাড়া আলমগীর জামে মসজিদ, সেনপাড়া জামে মসজিদ, তাবলীগ মারকাজ মসজিদসহ বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও ঈদগাহে সকাল আটটা থেকে দশটা পর্যন্ত ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

রংপুর সদর ও সিটি করপোরেশন এলাকা ছাড়াও পীরগাছা, কাউনিয়া, মিঠাপুকুর, তারাগঞ্জ, পীরগঞ্জ, বদরগঞ্জ ও গঙ্গাচড়া উপজেলায় পাড়া-মহল্লাভিত্তিক মসজিদ ও ঈদগাহ মাঠগুলোয় পরিস্থিতি বিবেচনায় ঈদের নামাজ আদায়ের সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়া থাকলে ঈদগাহের পরিবর্তে বেশির ভাগ ঈদ জামাত মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্রমতে, রংপুর মহানগরসহ জেলার আট উপজেলায় ছোট-বড় মিলে ৫ হাজার ৯০টি তালিকাভুক্ত মসজিদ রয়েছে। এ ছাড়া কিছু পাঞ্জেগানা মসজিদ এবং নির্মাণাধীন নতুন মসজিদ রয়েছে, যা এখনো তালিকাভুক্ত হয়নি। সব মিলে প্রায় ছয় হাজার মসজিদ রয়েছে জেলায়।

এবার ঈদুল আজহার জামাত আদায় শেষে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্তিসহ দেশে শান্তি-সমৃদ্ধি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সম্প্রীতি কামনায় মোনাজাতে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এ ছাড়া মাদকদ্রব্য, সন্ত্রাসবাদ, নাশকতা, জঙ্গিবাদ ও করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ার মাধ্যমে জনসচেতনতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে মোনাজাত পরিচালনা করবেন ঈদ জামাতের খতিবরা।

এদিকে বিভিন্ন এলাকার মসজিদ থেকে মাইকিং করে ঈদের জামাতে নামায় আদায় করতে হলে মুসল্লিদের জায়নামাজ সঙ্গে নিয়ে আসাসহ বাড়ি থেকে ওজু করে আসতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া মুখে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি ও শারীরিক দূরত্ব মানতে মুসল্লিদের প্রতি আহ্বান করা হয়েছে।

ঈদ উপলেক্ষে সিটি করপোরেশন থেকে নগরীর সড়ক ও সড়ক দ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও ঈদ মোবারক লেখা পতাকা দিয়ে সজ্জিত করা হবে। এ ছাড়া ঈদের দিন হাসপাতাল, এতিমখানা, কারাগার ও শিশু পরিবারগুলোতে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে।

বাংলাদেশ বেতার রংপুর কেন্দ্র ঈদের বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। তিন দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানমালায় ঈদ আনন্দে মাতি সবাই, ঈদের আনন্দ ঘরে ঘরে, ঈদ আড্ডা, ঈদের নাটক আনন্দ আনন্দ প্রচারিত হবে বাংলাদেশ বেতার রংপুর কেন্দ্রে।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এনএ